সৈয়দপুরে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে দাবি আদায়ে উর্দুভাষীদের মানববন্ধন

এফএনএস (আব্দুর রাজ্জাক, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০২:২১ পিএম
সৈয়দপুরে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে দাবি আদায়ে উর্দুভাষীদের মানববন্ধন

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে যৌক্তিক দাবি নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সৈয়দপুর উর্দুভাষী ক্যাম্পের হাজারো মানুষ। ১০ ডিসেম্বর সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতির করেন সৈয়দপুর উর্দুভাষী ক্যাম্প উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মাজিদ ইকবাল।

এ সময় বক্তব্য বলেন,ক্যাম্প উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ, ক্যাম্প নেতা আজগার আলী,চান,মহিলা নেত্রী সানজিদা বেগম,দুলারী বেগম,বিন্দিয়া খাতুনসহ অনেকে।

সভায় যোগ হয়ে বক্তব্য দেন সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আক্তার, সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ মুনতাকিম,ব্যবসায়ি রবিউল আউয়াল রবি। সভা পরিচালনা করেন ক্যাম্প নেতা আনোয়ার হোসেন। 

এ সময় ক্যাম্প উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মাজিদ ইকবাল বলেন, ২০০৮ সালে মহামান্য হাইকোর্টের রায়ে বাংলাদেশে বসবাসরত সকল উর্দুভাষী বাংলাদেশের নাগরিক। ওই বায়ের ভিত্তিতে উর্দুভার্থী ক্যাম্পবাসী তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভোটাধিকার পায়। সেই ভোটাধিকার তারা স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে প্রয়োগ করে আসছে।

কিন্তু দেশের উর্দুভাষীদের বড় অংশই ঢাকাসহ দেশের ৬টি জেলায় ১১৬টি ক্যাম্পে আধুনিক প্রায় সকল মৌলিক মানাবিক সুযোগ সুবিধা ও অধিকার বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

দাবীসমুহ হল জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে  উর্দুভাষীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। সংরক্ষিত মহিলা আসনে কমপক্ষে একজনকে সংসদ সদস্য হিসেবে দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার সংরক্ষণ নীতি থাকতে হবে।

ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষীদের মর্যাদাপূর্ণ পুনর্বাসন নিশ্চিত করার লক্ষে সরকারের যথাযথ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্থায়ী পুনর্বাসন সেল গঠন করতে হবে। সে লক্ষে একটি পুনর্বাসন টাস্ট ফান্ড গঠন করতে হবে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অবশ্যই উর্দুভাষীদের মতামতের ভিত্তিতে হতে হবে।

পুনবাসন না হওয়া পর্যন্ত মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক উর্দুভাষীদের কোনো ক্যাম্প উচ্ছেদ করা যাবে না এবং ক্যাম্পের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষীদের সংবিধান বর্ণিত 'পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর' আওতায় এনে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।

 ক্যাম্প সংলগ্ন সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন করে ক্যাম্পের শিশুদের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতিতে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে। সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উর্দভাষীদের ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

ক্যাম্পগুলোর স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাবার পানির এবং স্বাস্থ্যকর পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারিভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থা করে ক্যাম্পবাসীদের জন্যে চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করতে হবে।

ভাষাভিত্তিক সংখ্যা-অল্প জনগোষ্ঠী হিসেবে উর্দুভাষীদের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দেশের উন্নয়নে আমরাও অংশীদার। আমরা আশা করি, আমাদের ন্যায্য দাবিসমূহ পূরণের উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে