আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের ওপর গণভোট সামনে রেখে ভোটারদের নির্ভীকভাবে মত প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, সরকার এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, যেখানে কোনো ভয় থাকবে না, থাকবে কেবল জনগণের স্বাধীন ও সাহসী মতামত। দেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে, তা নির্ধারণ করার মালিক জনগণই।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ‘ভোটের গাড়ি’ বা ‘সুপার ক্যারাভান’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ২০২৬ সামনে রেখে ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে এই কর্মসূচির সূচনা করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্য সামনে রেখে দশটি ভোটের গাড়ি দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। মানুষের দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোটের তথ্য পৌঁছে দেওয়া হবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
ভিডিও বার্তায় প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “ভোটাধিকার কারও দয়া নয়, এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে।” তিনি আরও বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।
‘সুপার ক্যারাভান’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কেবল একটি গাড়ি নয়, এটি গণতন্ত্রের বার্তা বহনকারী একটি উদ্যোগ। “এটি মানুষকে জানিয়ে দেবে একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং মনে করিয়ে দেবে নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে,” বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বিশেষভাবে তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবার ভোট দিতে যাওয়া নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আপনারা এগিয়ে আসুন, প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বেছে নিন। চিন্তাভাবনা করে ভোট দিন।”
জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘ নয় মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে এই সনদ তৈরি হয়েছে। “এই সনদ দেশের মানুষ পছন্দ করলে দেশ আগামী বহু বছরের জন্য নিরাপদ পথে চলবে। আপনি যদি এই সনদ সমর্থন করেন, তাহলে গণভোটে অবশ্যই হ্যাঁ ভোট দিন,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।