ইঞ্জিন সঙ্কটে ঈদে পূর্বাঞ্চলের রেলযাত্রা বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। পুরোনো ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন পরিচালনার কারণে এমনিতে ঠিক রাখা যাচ্ছে না শিডিউল। বরং ট্রেনযাত্রা প্রায় সময় বিলম্বিত হচ্ছে এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন ১০০ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮০টির মতো পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ঈদের সময় স্বাভাবিক দিনগুলোর চেয়ে বেড়ে যায় ইঞ্জিনের চাহিদা। ফলে ইঞ্জিন সংকটের আসন্ন ঈদে রেলযাত্রায় ভোগান্তি বাড়তে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিজেলশপে ঈদ সামনে রেখে পুরোনো ইঞ্জিনগুলো মেরামতের কাজ চলছে। কিন্তু দক্ষ জনবল সংকট এবং ইঞ্জিন মেরামতের জন্য মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশের অভাব রয়েছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্নে যাত্রী পরিবহনে ১১৯টি ইঞ্জিনের প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে এতো ইঞ্জিন নেই। যদিও দুই প্রকল্পে ৬২৭ কোটি টাকায় কোরিয়ার হুন্দাই রেটেম থেকে ২০টি ইঞ্জিন কেনা হয়েছে। আরো ১০টি ইঞ্জিন কোরিয়া থেকে আসছে। ২০২০ সালে আমদানি করা ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিনের ট্রায়াল রান শেষ হয়েছে। তার মধ্যে দুটি ইঞ্জিন চালানো হয়েছে। নতুন ইঞ্জিনের গতিসীমা ১০০ কিলোমিটার। ওই ৩০টি ইঞ্জিন যুক্ত হলে পূর্বাঞ্চল রেলে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহনে গতি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সড়কের যানজট এড়িয়ে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য যাত্রীরা ট্রেনেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু এখন প্রতিদিনই চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারছে না ট্রেন।
সূত্র আরো জানায়, একটি ইঞ্জিনের মেয়াদকাল ২০ বছর হলেও ১৩৩টি ইঞ্জিনের মধ্যে ৯৪টির মেয়াদ নেই। ১৯৬১ থেকে ১৯৮২ সালে তৈরি ইঞ্জিনও সেখানে আছে। তাছাড়া ২০টি নতুন ইঞ্জিন যুক্ত হয়েছে। সংকট নিরসনে রেলওয়ে ১০টি ইঞ্জিন কিনেছিল। কিন্তু ওই ইঞ্জিনগুলোতে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংযোগের অভিযোগ ওঠায় রেলওয়ের শেডে রেখে দেয়া হয়। অতিরিক্ত ইঞ্জিনসংকটের কারণে সেখান থেকেও ৩-৪টি ইঞ্জিন ব্যবহার করতে হচ্ছে। বর্তমানে ইঞ্জিনসংকটের কারণে নতুন ট্রেন চলাচল শুরু করা যাচ্ছে না। চট্টগ্রাম থেকে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি, মহানগর প্রভাতি ও তূর্ণা নিশিথা নামে ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। তাছাড়া কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে একটি মেইল ট্রেনও চলাচল করে। এর মধ্যে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা ট্রেন বিমানবন্দর স্টেশন ছাড়া কোথাও যাত্রাবিরতি দেয় না।
এদিকে এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন জানান, ইঞ্জিনের সমস্যা থাকার পরও কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নতুন নতুন ট্রেনও একের পর চালু করা হচ্ছে। ইঞ্জিনগুলো পুরাতন হওয়ায় ঘন ঘন মেরামতও করতে হচ্ছে।