কুমিল্লা বিপনী বিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

এফএনএস (মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল; কুমিল্লা দক্ষিণ) : : | প্রকাশ: ১৬ মার্চ, ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
কুমিল্লা বিপনী বিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

কুমিল্লা বিপনী বিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। ঈদকে সামনে রেখে প্যান্ট-শার্ট, পাঞ্জাবি-পায়জামা, থ্রি-পিস, সেলওয়ার-কামিজ, শাড়ি-কাপড় এবং ছোটদের বাহারি ডিজাইনের পোশাকের সব বৈচিত্রময় কালেকশন নিয়ে বেচাকেনা শুরু করেছে কুমিল্লার ছোট-বড় শপিংমলের বিক্রেতারা। এবার নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় তানাবানা শাড়ি। যদিও দাম কিছুটা বেশি, তবে ডিজাইন ও মানের কারণে এটি ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। এবার ঈদ বাজারে কাঞ্জিবরণ, ফুয়াংফু, পাইনি সিল, হুসকি, তৃষ্ণা, জর্দান কাতান, চেন্নাই সিল ও অরগাঞ্জা শাড়ির পাশাপাশি তানাবানা শাড়ি নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। দেশি কাপড়ের মধ্যে জয়পুরী, কমল, প্যাটেলস ছাড়াও ভারতীয় ও পাকিস্তানি ডিজাইনের জমজম, বিন হামিদ, লাকজেরি, বিপুল, চিনন, ভিভেক থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট সবই পাওয়া যাচ্ছে।  

নগরীর বিভিন্ন শপিংমলের ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার ঈদ বাজারের কেনাকাটা বৃদ্ধি পেয়েছে।  রমজানের শুরুতে বাজার কিছুটা ঢিলেঢালা থাকলেও এখন ১৪ রমজানে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর কান্দিরপাড়ের প্লানেট এসআর, সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, আনন্দ সিটি সেন্টার, কিউ আর টাওয়ারসহ ক্যাটস আই ও অন্যান্য ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে চলছে বেচাকেনার ধুম।  ব্যবসায়ীরা জানান, এবার তারা দ্বিগুণ বিক্রির আশা করছেন। দেশি কাপড়ের পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের বাহারি পোশাকের চাহিদাও বেড়েছে। থ্রি-পিসের দোকানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে, পাশাপাশি বোরকার চাহিদাও বেড়েছে।  

ক্রেতারা জানাচ্ছেন, এবারের ঈদ কালেকশনের ডিজাইন বেশ আকর্ষণীয়, তবে দাম কিছুটা বেশি। মেয়েদের পোশাকের দোকানে ভিড় সবচেয়ে বেশি। কেউ পরিবারসহ, কেউ মায়ের সঙ্গে, আবার কেউ বাবার সঙ্গে মার্কেটে এসেছেন পছন্দের পোশাক কিনতে।  

সাত্তার খানের বিসমিল্লাহ বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী আলী আজম বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ১৪ রমজানে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে। এবারের ঈদে নারীদের সবচেয়ে বেশি চাহিদা তানাবানা শাড়ির। দামও সাধ্যের মধ্যে, যা ৪,৫০০ থেকে ৮,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

খন্দকার হক টাওয়ারের ব্যবসায়ী কাজল জানান, রমজানের মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি বাড়ছে, তবে অনেকে এখনো শুধু দেখেই যাচ্ছেন। বেতন-বোনাস পেলে মূল কেনাকাটা আরও বাড়বে।  

কান্দিরপাড় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও নিউ লেডিস কর্নারের মালিক আলহাজ আবদুর রহমান বলেন, কান্দিরপাড় ঈদের কেনাকাটার প্রাণকেন্দ্র। অভিজাত শপিং মলে কেনাকাটা করতে এসে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। আমরা আশা করছি, রমজানের শেষদিকে বিক্রি আরও বাড়বে।

নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, সকালে এসেছি ছেলে-মেয়ে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য ঈদের জামাকাপড় কিনতে। কিন্তু মার্কেটে এসে দেখি পা ফেলার জায়গা নেই। মানুষের ভিড়ে অসহনীয় গরম। এর মধ্যে দোকানদাররা জামা-কাপড়ের দাম চাচ্ছেন অনেক বেশি। ঘণ্টাখানেক ঘুরছি অতিরিক্ত দামের কারণে এখনো কোনো পোশাক কিনতে পারিনি।

আবদুর রহমান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বাচ্চাদের পোশাক উত্তাপ ছড়াচ্ছে। হাজার-পনেরো শ টাকার নিচে পছন্দ করার মতো কোনো পোশাক নেই। মার্কেটে এসে বাজেট মেলাতে পারছি না। পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কিনতে হলে ফুটপাতের দোকান ছাড়া বিকল্প উপায় নেই।

নিগার সুলতানা নামে এক তরুণী বলেন, আট হাজার টাকায় ভারতীয় ব্র্যান্ডের একটি থ্রি-পিস নিয়েছি। গতবারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে।    

মার্কেটের মতোই ফুটপাতেও জমজমাট বেচাকেনা চলছে জানিয়ে মাসুদ আলম নামে ভাসমান এক বিক্রেতা বলেন, মার্কেটের জিনিস আর আমাদের জিনিসের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। বরং আমাদের দোকান ভাড়া লাগে না। তাই দাম অনেক কম। ৫ রোজা থেকেই ভালো বিক্রি হচ্ছে। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে এবং বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ঈদের বাজার নির্বিঘ্নন করতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।  রোববার থেকে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় অপরাধ বেশি সংঘটিত হয়, সেসব এলাকায় বিশেষ নজর দেওয়া হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে