হবিগঞ্জের মাধবপুরে যথাযোগ্য মযার্দায় ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবস পালিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ফরিদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সকাল ১১টায় আনুষ্টানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক। এ সময় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজিদুর রহমান, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ জাহিদ বিন কাশেম, সহকারি পুলিশ সুপার মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেল একেএম সামিউল হক, ওসি তদন্ত কবির হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহম্মদ, পৌর বিএনপির সভাপতি গোলাপ খাঁন, সাধারন সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য আলাউদ্দিন আল রনি, তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউসুফ খাঁন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কাউন্সিলের নেতা হারুন অর রশিদ গোলাপ, শাহজাহানপুর ইউ/পি বিএনপির সভাপতি আলফাজ মিয়া, উপজেলা প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীসহ শত শত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এসময় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা জেলা প্রশাসকের কাছে ঐতিহাসিক এ স্থানটিকে মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর, পর্যটন এলাকায় রুপান্তরের দাবি করলে তিনি তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন উপজেলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মির্জা হাসান। পরে অনুষ্টান স্থলে এসে উপস্থিত হয় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোটের বিচারপতি মোঃ ফয়েজ আহম্মেদ ও দেবাশীষ রায় চৌধুরী। তারা ঐতিহাসিক স্থান ও ম্যানোজার বাংলোটি পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য যে ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজার বাংলোয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উর্ধ্বতন ২৭ সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এক বৈঠকেই দেশকে স্বাধীন করার শপথ এবং যুদ্ধের রণকৌশল গ্রহন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণকে ভাগ করা হয় ১১টি সেক্টর ও ৩টি বিগ্রেডে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানী পিস্তলের গুলি ছুড়ে আনুষ্টানিক ভাবে মুক্তিযুদ্ধের শুভ সূচনা করেন। তেলিয়াপাড়াকে প্রথম অস্থায়ী সেনা সদর গন্য করে মুক্তিযোদ্ধ কালে মুক্তিবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের নীতি-নির্ধারণী সর্বমোট ৩টি সভার মধ্যে প্রথম দুটি সভা এখানেই অনুষ্টিত হয়। ওই বৈঠকে তৎকালীন কর্ণেল (অবঃ) এম.এ.জি উসমানী, লেঃ কর্ণেল এম.এ রব, লেঃ কর্ণেল সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, মেজর কে.এম. শফিউল্লাহ্, মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর নূরুজ্জামান, মেজর শাফায়াত জামিল, মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরী, মেজর নূরূল ইসলাম, মেজর আবু উসমান, মেজর সি.আর দত্ত, ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার বিদ্রোহী মহকুমা প্রশাসক কাজী রকিবউদ্দিন, ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে বিএসএফ এর পূর্বাঞ্চলীয় মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার ভি,সি পান্ডে এবং আগরতলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওমেস সায়গল প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।