নাটোরের লালপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩জন আহত হয়েছে। এঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতিসহ ১৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের মোরদহ মাঠে এঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন উপজেলার আরবাব ইউনিয়নের হাসেমপুর গ্রামের মৃত বিরেন্দ্রনাথের ছেলে শ্রী বিনয় কুমার (৬৫), তার ছেলে সজীব কুমার (২৭) ও বিপদ কুমারের ছেলে দিপু কুমার (২০)। অভিযুক্ত হলেন আড়বাব ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শামীম হোসেন (৫০), রায়হান আলী (৪৫), শিশির আহমেদ পলক (৩০), সাইদুল ইসলাম (৪৫), মোতালেব হোসেন (৩৫), সুইটি ইসলাম (৩০), সাদ্দাম (২৫), আসমত আলী (৪৭), পিয়াস আলী (২৮), জাহাঙ্গীর আলম কালু (৫০), শাহিন আলী (৫০), নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল (৬০), নিতাই মন্ডল (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিপেন্দ্রনাথ মন্ডল ও তার ভায়ের ছেলে বিনয় কুমারের সাথে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলে আসছে। শুক্রবার সকালে বিনয় কুমার বিরোধপূর্ণ সেই জমিতে চাষ করতে যান। এসময় তার কাকা শচীন্দ্রনাথের ভাড়াটিয়া লোকজন সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে বিনয় কুমার (৬৫), সজীব কুমার (২৭) ও দিপু কুমার (২০) কে কুপিয়ে আহত করে। দ্রুত স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
আহত বিনয় কুমার জানান, সকালে তারা তাদের জমিতে পাটের বীজ বপন করতে গেলে তার কাকা নিপেন্দ্রনাথ মন্ডলের নেতৃত্বে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি শামীম হোসেন সহ, রায়হান, সাদ্দাম, সুইট, মোতালেব, সাইদুল তাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
নিপেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, তার ভাইয়ের ছেলে বিনয় কুমারের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলে আসছিল। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি আদালতে তার পক্ষে জমির রায়পান তিনি। এবিষয়ে স্থানীয় ভাবে একটি সালিশ বসলে সালিশে বলা হয় আদালতের রায় অনুযায়ী উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। কিন্তু আদালতের রায় অমান্য করে তার ভাতিজা সকালে জমিতে চাষ করতে যায়। বিষয়টি স্থানীয় ওই সালিশ বর্গকে জানালে শামীম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে জমি চাষ করতে নিষেধ করায় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা সৃষ্টির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে শুনেছি। তবে আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় আমার পরিবারের কেহ সেখানে যায়নি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি শামিম হোসেন মুঠোফোনে জানান, আমরা বিরোধকৃত জমিতে উপস্থিত হয়ে চাষাবাদ করতে নিষেধ করেছি। তবে কাউকে মারপিট করা হয়নি।
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক জানান এব্যাপারে বিনয় কুমার বাদী হয়ে ১৩জনের নামে একটি মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।