সাজ্জাদকে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন বলা হয়। সে এতটাই ভয়ঙ্কর যে, ফেসবুক লাইভে এসে নগরীর বায়েজিদ থানার ওসি আরিফুর রহমানকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। শুধু তাই নয়, পুলিশকে পাল্টা গুলি ছোড়ে এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে লাফিয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অপরাধের অন্তত ১৫টি মামলা।
অপরদিকে, পুলিশ-প্রশাসনকে নাকানিচুবানি খাইয়ে গত ১৫ মার্চ রাতে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স থেকে গ্রেফতার হয় সাজ্জাদ। সেখানে তিনি তামান্নাকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করছিলেন। এ সময় স্ত্রী তামান্না পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আগেই চম্পট দেয়। সাজ্জাদ এই সময় তামান্না কে নাম ধরে বারবার ডাকলেও তামান্না সেখানে আর ফিরে যায়নি। এরপর কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বান্ডেল মেরে স্বামীকে ১০/১২ দিনের মধ্যে জামিন করানোর অজ্ঞাতস্থান থেকে এক ফেসবুক ভিডিও বার্তার পর তিনিও আলোচনায় উঠে আসে। পুলিশ তাকেও খুঁজছে বলে জানা গেছে।
সিএমপি থানা পুলিশ জানিয়েছে, আরো অবাক করা তথ্য। সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, সন্ত্রাসী সাজ্জাদের ২৫ জন স্ত্রী রয়েছেন। তার স্ত্রীরাও অপরাধের সঙ্গী। পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরো বলেন, ভয়ংকর এই অপরাধী ছোট সাজ্জাদ পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করলে পরিণতি কী হয়, সাজ্জাদের গ্রেপ্তার তারই প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, অপরাধী যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আসতে হবেই। নগরীর অনন্য শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
গত বছরের ২১ অক্টোবর সোমবার বিকালে নগরীর চান্দগাঁও থানার শমসেরপাড়া এলাকায় আফতাব উদ্দিন তাহসিন নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে। এর আগে একই বছরের ২৯ আগস্ট শহরের অক্সিজেন কুয়াইশ সড়কে আনিস ও মাসুদ নামে দুই যুবককে রাতের অন্ধকারে গুলি করে হত্যা করেন আওয়ামী সরকারের স্থানীয় নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে আধিপত্য বিস্তার করা এই সন্ত্রাসী।
চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও ও বায়েজিদ এবং জেলার হাটহাজারী থানা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটান সাজ্জাদ। গত ৪ ডিসেম্বর নগরীর অক্সিজেন এলাকায় পুলিশের ওপর প্রকাশ্যে গুলি ছোড়েন তিনি। তার এলোপাতাড়ি ছোড়া গুলিতে আহত হন পুলিশ সদস্যসহ চারজন। এরপর সিএমপির বায়েজিদ থানার ওসি আরিফুর রহমানকে হত্যার হুমকি দিয়ে দেশজুড়ে আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি। আওয়ামী সরকারের আশ্রয়ে হৃষ্টপুষ্ট এই সন্ত্রাসীর তথ্য জানতে এরই মধ্যে অফিসিয়ালি পুরস্কার ঘোষণাও করে সিএমপি। সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ সন্ত্রাসীদের ধরতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করায় নগরবাসী তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।