পীরগঞ্জে কৃষকের পকেট ভারী করছে পানি ফল

এফএনএস (মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান; পীরগঞ্জ, রংপুর) : : | প্রকাশ: ১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:৩৩ এএম : | আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
পীরগঞ্জে কৃষকের পকেট ভারী করছে পানি ফল

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বছরে একবার মাত্র ধানের চাষ করা হয় এ ধরনের অনেক জমি রয়েছে। সেই জমিতে জৈষ্ঠমাসে পানি ফলের বীজ বুনিয়ে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। রোপা আমন ধান জলাবদ্ধতায় ডুবে যায়। সেই জলাবদ্ধতার জমিতে এখন বিকল্প হিসেবে পানি ফলের চাষ করা হচ্ছে। অনেকেরই ভাগ্য বদলে দিয়েছে এই পানি ফল। এলাকায় নতুন নতুন করে এই ফলের চা ষে ঝুকে পড়ছেন কৃষকরা। উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় সয়েকপুর গ্রামের পানি ফল চাষি পরিমল এর সাথে। তিনি বলেন ৩৩ শতক বিলের পানিতে বীজ বপন করে ২০ হাজার টাকার পানি ফল বিক্রি করেছেন। জমিতে আরও যে পরিমান ফল রয়েছে তা বিক্রি হবে কমপক্ষে ৫ হাজার টাকায়। পানি যতদিন থাকবে ততদিন ফলও পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি। একই এলাকার বামনীর বিলে ৭০ শতক জমিতে পানি ফলের চাষ করে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছে জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক মিজানুর রহমান। তার সাথে তার স্ত্রীও এই পানি ফল চাষে কাজ করছেন। মিজানুর রহমান জানান,জমিগুলো পানির নিচে ডুবে থাকে, প্রথমবারের এই আবাদ করে ভালো টাকা পেয়েছেন। এছাড়াও জমি থেকে আরও অনেক ফল পাবেন তিনি। ২ হাজার টাকা মন হিসেবে বিক্রি করেছেন এ পর্যন্ত। পানিফল আবাদের খরচ মাত্র একটাই। তা হলো মাঝে মধ্যে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। কোনপ্রকার সার প্রয়োগের দরকার হয় না। একই ইউনিয়নের পানেয়া গ্রামের তারা মিয়া বলেন,উপজেলায় শুধু মাত্র পাচগাছি ইউনিয়নেই বিল বেশি। এই বিলের পানিতে সিংঙ্গর আবাদ করা হয়। আমাদের এলাকার লোকজনের মধ্যে এই আবাদ সম্পর্কেকোন ধারনা ছিল না। পানেয়া গ্রামে আমি প্রথম এই আবাদ নিয়ে এসেছি। বর্তমানে  এলাকায় ২০ থেকে ৩০ জন মানুষ পানি ফল বা (সিংঙ্গরের) এর চাষ করছে। নিজের জমি ছাড়াও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বানিজ্যিক ভাবে পানি ফলের চাষ করছেন কেউ কেউ। এজন্য প্রতি বছর এই ফল আবাদের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ইউনিয়নটির জনপ্রতিনিধিরা বলছেন,পাঁচগাছি ইউপিতে অনেক বিল রয়েছে বিশেষ করে এই বিল গুলোতে জলাবদ্ধতার পানি সবসময়ই থাকে। যে কারনে বছরে শুধু একবার ধানের চাষ করা সম্ভব হয়। এখন জলাবদ্ধতার জমি গুলোতে পানি ফল আবাদ করা হচ্ছে। একবার যে ব্যক্তি চাষ করেছে সে প্রতি বছরই এই ফল চাষ করছে। এজন্য পানি ফল চাষির সংখ্যা প্রতি বছর বেড়েই চলেছে। বলতে গেলে বানিজ্যিক ভাবে এ অঞ্চলে এখন পানি ফলের চাষ করা হচ্ছে।  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, অনাবাদি জমিতে পানি ফলের চাষ করা যায়। এই আবাদে খরচ কম সময়মত ফলের গাছে বালাইনাশক বা কীটনাশক প্রয়োগ করলেই ফলন ভালো পাওয়া যায়। পানি ফল চাষাবাদের জন্য অই এলাকার জমিগুলো ভালো। এখানে চাষিদের মধ্যে পানি ফল চাষের অনেক আগ্রহ রয়েছে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে