প্রতিবছরের ন্যায় আনন্দঘন পরিবেশে আজ বুধবার উপজেলার আঠাউরী বিলে ভাটিবাংলার ঐতিহ্যবাহি দিনব্যাপী বার্ষিক জাল বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আঠাউরী বিলে জাল বাইচের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন না হলেও প্রায় শত বছরেরও বেশী সময় ধরে ব্যতিক্রমী‘জাল বাওয়া”উৎসব পালন করে আসছে নাসিরনগর ও ভিটাডুবি ধীবর সমবায় সমিতির অর্ন্তভূক্ত কয়েক গ্রামের জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এ জাল বাইচে দল বেধেঁ বিলে মাছ ধরতে নামেন জেলেসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা-শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। তাদের হাতে ছিল বেড় জাল, ঠেলা জাল, বাদাই জাল, লাঠি জাল,টানা জাল,রিং জালসহ মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম। বিলপাড়ে সমবেত হওয়ার পর একসাথে বিলে নেমে মাছ ধরার আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন তারা। মাছ ধরা দেখতে বিলের পাড়ে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন। জাল দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জাল বাইচ নামে পরিচিত। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিল থেকে বর্ষার পানি প্রায় নিঃশেষ হবার পথে। মূল বিল, খালে কিছু অবশিষ্ট পানি রয়েছে। এমন সময় এ এলাকার উৎসব প্রিয় জেলেরা যোগ দিয়েছেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে। এ সময় তাদের হৈ-হুল্লোড়ে অন্যরকম আমেজ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা মাছ ধরা শেষে একে একে উঠে আসেন তারা। কারো হাতে ছিল ছোট-বড় বোয়াল,কারো হাতে কাতলা,শোল,গজার কিংবা রুই মাছ। আর জাল দিয়ে ছোটরা শিকার করে টেংরা-পুঁিটসহ ছোট মাছ। মাছ পাওয়া না পাওয়া তাদের কাছে বড় কথা নয়, ব্যতিক্রমী এ উৎসবে যোগ দিয়ে আনন্দ উপভোগই যেন তাদের কাছে মুখ্য। তবে আগের মতো মাছ এখন পাওয়া যায় না এমন অভিযোগ করলেন অনেকে। এবার অনেকেই মাছ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। বহু বছর ধরে চলে আসা এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে চান স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন। ভিটাডুবি ধীবর সমবায় সমিতির সভাপতি পরিমল দাস জানান, জাল বাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। কেউ মাছ ধরতে পারুক আর না পারুক সবার অংশগ্রহণে এ উৎসবে আনন্দের কোন কমতি নেই। আগে এই বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো অনেকে। বিলটি দিন দিন ভরা হয়ে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তাই বিলটি খনন করা জরুরী বলে তিনি জানান।