অস্কারজয়ী তথ্যচিত্র ‘নো আদার ল্যান্ড’-এর সহ-নির্মাতা হামদান বল্লালকে তুলে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন। জানা যায়, ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের সুসিয়া গ্রামে গত সোমবার সশস্ত্র বসতি স্থাপনকারীরা হামদান বল্লালকে আক্রমণ করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। কয়েকজন ইহুদি আমেরিকান কর্মীর মতে, হেবরনের দক্ষিণে মাসাফের ইয়াত্তা এলাকার সুসিয়া গ্রাম প্রায় ১৫ জন সশস্ত্র বসতি স্থাপনকারীর একটি দল ঘিরে ফেলে এবং আক্রমণ করে। তারা পাথর ছুঁড়তে শুরু করে এবং হামদানের বাড়ির কাছে একটি জলের ট্যাঙ্ক ধ্বংস করে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, সামরিক পোশাক পরিহিত অন্যান্য বসতি স্থাপনকারীদের সাথে একদল সৈন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলো। তারা হামদানকে তার বাড়িতে গিয়ে ধাওয়া করে আহত করে এবং তাকে সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। জানা গেছে,হামদানের মাথায় আঘাত করা হয় এবং সেখান থেকে রক্ত ঝরছিলো। তবে কেন এই নির্মাতার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে, তার সুস্পষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। ‘নো আদার ল্যান্ড’ এর চার পরিচালকের মধ্যে সকলেই ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের বাসিন্দা। তাদের একজন বাসেল আদ্রা। তিনি গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন যে, তিনি মনে করেন ক্রমবর্ধমান বসতি স্থাপনকারী সহিংসতা নির্ভর এই তথ্যচিত্রের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রতিক্রিয়া হতে পারে এটি। তিনি বলেন, ‘সুসিয়া গ্রামের ফিলিস্তিনিরা প্রায় প্রতিদিন বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা শারীরিক আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এখানে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বাড়ছে। সম্ভবত এটি আমাদের সিনেমা এবং অস্কারের প্রতিশোধ!’ সুসিয়ায় হামলার প্রত্যক্ষদর্শী আদ্রা এই সহিংসতাকে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি সৈন্যদের সাথে কয়েক ডজন বসতি স্থাপনকারী ছিল এবং তারা আমাদের অস্ত্র দিয়ে হুমকি দেখাচ্ছিলো।পুলিশ শুরু থেকেই সেখানে ছিল কিন্তু হস্তক্ষেপ করেনি। সৈন্যরা যখন আমাদের দিকে তাদের অস্ত্র তাক করছিলো, তখন বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘরে আক্রমণ শুরু করে।’ এই নির্মাতা বলেন, ‘হামদান তার পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা করছিলো। তখনই বসতি স্থাপনকারীরা তাকে আক্রমণ করেছিলো।’ বলা প্রয়োজন, গত ফেব্রুয়ারিতে আদ্রাকেও মুখোশধারী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ঘিরে ফেলে এবং আক্রমণ করে। উল্লেখ্য, ‘নো আদার ল্যান্ড' নির্মাণ করেছেন ৪ জন নির্মাতা যাদের প্রত্যেকে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের বাসিন্দা। এটি ৯৭তম অস্কারে সেরা ডকুমেন্টারি ফিচার ফিল্মের পুরস্কার জিতে নেয়।