ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রতি বছরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখে “মঙ্গল শোভাযাত্রা”আয়োজন করতে যাচ্ছে। শোভাযাত্রায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ আবু সাঈদের ২০ ফুট দীর্ষ ভাস্কর্য রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সমালোচনার মুখে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও এখন তারা এটিকে ভাস্কর্য না বলে “প্রতীকী মোটিফ”হিসেবে উল্লেখ করেছে। এ বিষয়ে বুধবার (২৬ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “শহিদ আবু সাঈদের ‘প্রতীকী মোটিফ’ নিয়ে প্রাথমিক স্কেচ হয়েছিল। এর মাধ্যমে আবু সাঈদের বীরত্বকে তুলে ধরার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কেউ কেউ চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু যেহেতু আবু সাঈদের পরিবার চাইছে না, তাই এ বিষয়ে অনেকের চিন্তা থাকলেও সেখান থেকে সরে আসা হয়েছে।” এর আগে গত সোমবার আজাহারুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, “এবার শোভাযাত্রায় প্রাথমিকভাবে বড় আকারের চারটি ভাস্কর্য রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে ২০ ফুট দীর্ঘ জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য। আরও থাকবে একটি করে বাঘ, পাখি ও স্বৈরাচারের প্রতীকী ভাস্কর্য। আর অনেক মুখোশ থাকবে।” এদিকে, এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা শোনা গেলেও সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন কর্মসূচি নিয়ে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান। সভায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। উল্লেখ্য, ঢাবির চারুকলা অনুষদ ১৯৮৯ সাল থেকে পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে এটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।