নাগেশ্বরীতে জমির খাজনা আদায়ে হালখাতা

এফএনএস (হাফিজুর রহমান হৃদয়; নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম) : : | প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:০২ পিএম : | আপডেট: ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:০২ পিএম
নাগেশ্বরীতে জমির খাজনা আদায়ে হালখাতা

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে জমির খাজনা (কর) আদায়ে হালখাতার আয়োজন করেছে উপজেলা ভূমি অফিস। বৈশাখের দ্বিতীয় দিন ভূমি অফিস কার্যালয়ে এ হালখাতার আয়োজন করা হয়। ইতোপূর্বে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের বকেয়া টাকা তুলতে ব্যাক্তিগত হালখাতার আয়োজন দেখা গেলেও এবার প্রথম জমির খাজনা আদায়ে হালখাতার ব্যবস্থা করা হয়।

এ উপলক্ষে লাল নীল কাগজ, ব্যানার ফেস্টুনে সাজানো হয় ভূমি অফিস চত্তর। ঘোড়ার গাড়ী গরুর গাড়ীসহ আয়োজন করা হয় গ্রামীণ নানা অনুসঙ্গ। হাল খাতায় অংশগ্রহণকারীদের  খাওয়ানো হয়েছে মোয়া মুড়ি ও মিষ্টি। এ ধরণের আয়োজনে জমির মালিকরা অনেক খুশি। সন্তোষপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ধনিগাগলা এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, স্বাধীনতার পর আমি আমার জীবনদশায় কখনো দেখি নাই জমির খাজনা দিতে আসলে জনগণকে মিষ্টি খাওয়ায়। জনগণকে দালালের হয়রানি ছাড়া জমির খাজনা পরিশোধ করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের এই হালখাতা প্রতিবছর হলে জমির খাজনা বকেয়া পড়বে না।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারিসুল বারি রনি জানান, এবছরই প্রথম এমন আয়োজন দেখেছেন তিনি। এমন আয়োজন হলে মানুষ উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে হালখাতার মাধ্যমে ভূমি কর পরিশোধ করতে পারবেন। এতে করে দেশের রাজস্ব খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তাই এমন আয়োজন দেশের প্রতিটি উপজেলায় হওয়া প্রয়োজন। 

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, সম্রাট আকবরের সময় থেকে ভূমি অফিসে বাঙালি ঐহিহ্য হালখাতা অনুষ্ঠান চালু ছিল। কিন্তু ব্রিটিশরা এদেশে আসার পর ভূমি অফিসের হাললহাতা বন্ধ হয়ে যায়। নববর্ষ উপলক্ষে বাঙালির ঐহিত্য ফিরিয়ে আনতে আমরা বাংলাদেশে প্রথম ভূমি অফিসে এই হালখাতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। আজ দিনব্যাপী এই হালখাতা অনুষ্ঠান হবে। আমরা প্রত্যাশা করতেছি আমাদের বকেয়া ভূমি করের প্রায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা আদায় হবে।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ  বলেন, আমরা দেখতাম বড় বড় ব্যবসায়ীরা হালখাতা করে তাদের বকেয়া আদায় করতো। বাংলাদেশে এবারেই প্রথম উপজেলা ভূমি অফিসে হালখাতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরাতন ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনেছে। এই হালখাতা অনুষ্ঠানে জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নিয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিস তাদের বকেয়া খাজনা সব আদায় করতে পারবে বলে আশা করছি।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রতিবছর ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকা ভূমি কর আদায় হয়। এরমধ্যে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা গতবছর বকেয়া ছিল।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে