পটুয়াখালীর জেলা জুড়ে গত এক মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। ডাকাতি, চুরি, চাঁদাবাজি, দখল বানিজ্য, অপহরণ, কিশোর গ্যাং, মাদক, বখাটদের উৎপাত, নারী হেনস্থা, রাজনীতিক অস্থিরতায় সংঘাত, আত্মহত্যা এবং হত্যার মত অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় জেলার সাধারন মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি তুলে শান্তি সামাবেশ ও থানায় গণ অভিযোগ কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকার সমালোচনা করেছেন অনেকেই।
স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বেড়েছে। একই সাথে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে না পারায় পুলিশের দক্ষতা ও যোগ্যতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
৩ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) পৌরশহরে ইতি দাস (২০) এক কলেজ ছাত্রী তার বন্ধুর সাথে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে এক ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে শ্লীলতাহানি, শারিরিক ও মানসিক ভাবে চরমভাবে হেনস্থার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন। ওই ছাত্রী বরিশাল হাতেম আলী কলেজের অর্নাস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সে উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের সমীর দাসের মেয়ে। এ ঘটনার দুইদিন পার হলেও জড়িতদের আইনের আওতায় আনেত পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, হেনস্থাকারী ওই ছাত্রদল নেতার নাম মো. হৃদয় হাওলাদার(২০)। সে পৌর ছাত্রদলের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারন সম্পাদক। তার বাবা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি। হৃদয় পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাকিবুজ্জামান রাকিবের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এর আগেও হৃদয় উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মিজানুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় তার নাম উঠে এসেছিল। যদিও পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাকিবের দাবি, তাকে (হৃদয়) পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি উপজেলার কনকদিয়া আমিরাবাদ এলাকায় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মূনঈমুল ইসলাম ওরফে মিরাজের নেতৃত্বে অটোচালক সুজন হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। নিহত সুজনের বাবা নবী আলী হাওলাদারের দাবি, চাঁদার টাকা না পেয়ে তার ছেলেকে ছাত্রদল নেতা মিরাজ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় সুজনের বাবার দায়ের করা হত্যা মামলায় ৪জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত ৩ জানুয়ারি উপজেলার কালাইয়া বন্দরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি ও ব্যবসায়ী শিবানন্দ রায় বণিককে অপহরণ করে একদল ডাকাত। এঘটনার দুইদিন পর ব্যবসায়ীকে অজ্ঞত উদ্ধার করে পুলিশ। ডাকাতির সাথে জড়িত ৮জনকে আটকও করা হয়। তবে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম বানিজ্যিক বন্দর কালাইয়া বন্দরে প্রকাশ্য এমন ডাকাতির ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা স্থালের অদুরে নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থাকার পরেও এমন ঘটনায় নৌ পুলিশের দায়িত্বে অবহেলারও অভিযোগ উঠেছিল। একই দিনে উপজেলার পশ্চিম মদনপুরা গ্রামে মো. ওবায়দুল কবির নামে এক কলেজ শিক্ষকের বাসায় ডাকাত সেজে লুটপাতের ঘটনা ঘটে।
গত ২৬ জানুয়ারি কালাইয়া ট্রাকস্ট্যান্ড দখল নিয়ে বিএনপির দুইপক্ষের দুই দফায় সংঘর্ষে কমপেক্ষ ১০ জন আহত, কালাইয়া ইউনিয়নের চরফেডারেশন দখল নিয়ে দুইপক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ৮জন আহত হন। এতে একপক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন অপর পক্ষের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ, ছাত্রদল নেতা শাহরাজ জয় সহ ৭জন আহত হন। এর মধ্যে জয়ের হাত ও পা ভেঙে দেওয়া হয়। এছাড়াও হাট দখল নিয়েও একাধিক বার সংঘাতের ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও উপজেলার চরাঞ্চলে কৃষকের গরু মহিষ চুরি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এসব চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাননি ভুক্তভোগীরা। পৌর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনাও বেড়েছে।
স্থানীয় বিএনপি দলীয় একটি সূত্র জানায়, উপজেলায় বিএনপির রাজনীতি তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে তিনপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ সুযোগে একটি পক্ষ চাঁদাবাজি, দাখল বানিজ্য, সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছেন। এসব অপরাধমূলক কাজে তারা উঠতি বয়সি তরুণদের ব্যবহার করছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামুয়েল আহমেদ লেলিন বলেন,‘ আগামীর দেশ নায়ক তারেক রহমান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন বিএনপির কোনো নেতাকর্মী কোনো রকম দখল, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারেব না। যদি জড়িত থাকে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তারপরেও বাউফলে যারা দলের নাম ভাঙিয়ে অপরাধ করছেন তারা দলের কেউ না। তারা দলের শত্রু হিসেবে চিহিৃত।
দলীয় এমন বিশৃঙ্খলার কারণ ইঙ্গিত করে এ নেতা বলেন, বাউফলে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি নেই। তিন বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে দলীয় কর্মকাণ্ড চলছে। এ আহ্বায়ক কমিটিও তিনভাগে বিভক্ত। যার কারণে দলীয় শৃঙ্খলা নেই। পূর্নাঙ্গ কমিটি হলে দলে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশা করেন তিনি।
এদিকে, বাউফল উপজেলায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, চাঁদাবাজি, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ও সাধারন মানুষের নিরাপত্তাহীনতার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শান্তি মিছিল, সমাবেশ ও থানায় গণ অভিযোগ দিয়েছেন। বাউফল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মুনতাসির তাসরিপ বলেন,‘ ছাত্র- জনতা জুলাই আগস্টে রক্ত দিয়ে নতুন করে দেশ স্বাধীন করেছে। আমরা চেয়েছিলাম একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা। যেখানে সাধারন মানুষ স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করেবেন। সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাউফলের চিত্র ভিন্ন। গত কয়েক মাসে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যকর ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেন এ ছাত্র নেতা।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানান,‘ জনবল স্বল্পতার কারনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। কলেজ ছাত্রী ইতি আত্মহুতির বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
পটুয়াখালী শহরে চুরি ছিনতাই বেড়েছে অনেক। মন্দির, মসজিদ সহ দোকান ঘরবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি হচ্ছে দেদারছে। পুলিশ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সমাজ কর্মী সহ বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের মধ্যে নানা ক্রনে আত্মহত্যার প্রবনতা ব্যাপক বেড়েছে। অবক্ষয়ের মুখে উঠতি বয়সি তরুন তরুনি। জেলার বড়বিঘাই, সেহাকাঠিতে একাধিক হত্যার ঘটনায় ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। পটুয়াখালী পুলিশ লাইনে কনেস্টবল তৃষা াবশ্বাস, মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী রিযামনি, বাউফলে শিক্ষার্থী ইতি দাস এর আত্মহনন সামাজিকভাবে প্রভাবিত করেছে সমাজকে। জানাগেছে, গত তিন মাসে জেলার ৮টি উপজেলায় বেসরকারি হিসেবে বিষপানে এবং গলায় ফাঁস লাগিয়ে প্রায় অর্ধশত আত্মত্যার ঘটনা ঘটেছে। বাউফলে ছুড়িকাঘাতে চালক সুজনকে হত্যা, গলাচিপার রামনাবাদ নদী থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, দশমিনায় মহিউদ্দিন হত্যা সবই যেন আইনশৃঙ্খার চরম অবনতির বার্তা দিচ্ছে জেলা জুড়ে। রাঙ্গাবালীর ওসির বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহন ছাড়া মামলা না নেয়ার অভিযোগ এখন সবার মুখেমুখে। সেখানে মাছের ঘের দখল থেকে শুরু কওে ঘরবাড় জমিজমা দখল এখন নিত্য দিনের ঘটনা। ওসির প্রত্যক্ষ মদদে এসব অপকর্ম করছে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। যা নিয়ে সেখানকার বৈষম্য বিরোধী এক সমন্বয়ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ তুলে কঠোর ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন। অবশ্য এসব অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানার ওসিরা বরাবরের মতই গতানুগতিক এড়িয়ে যান।
কলাপাড়া এবং কুয়াকাটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আরো চরমে পৌছেছে। কলাপাড়ার পায়রা বন্দর এলাকায় ছাত্র গন অধিকার পরিষদেও নেতা রবিউল হাওলাদার অন্তরকে অপহরন করারর ৫ দিও পর ঢাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কুয়াকাটায় সম্প্রতি সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরনকে গুরুতর কুপিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। সে এখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন। একই উপজেলার সলিমপুরে শাহনাজ নামে এক গৃহবধুর হাতপা বাধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সব ঘটনায় প্রতিকার না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানা ওসিদের প্রশাসনিক দক্ষতা ও যোগ্যতার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি কুয়াকাটায় বিশাল ইয়াবার চালান ধরা পড়ার মুল চোরাচালানিরা ধরাছোয়ার বাইওে রয়েছেন। এরআগেও একাধিকবার পটুয়াখালীর চোরকারবারি প্রফুল্ল এবং বরিশালের জয়দেব চোরাচালানি একাধিক মামলায় জড়িত হলেও পুলিশের মাধ্যমেই ছাড়া পায় এবং অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রনে মরিয়া থাকেন। কিছুদিন আগেও বরিশালে হাজতবাস করেছেন প্রফুল্ল। তাদেও বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বিরোধী অভিযোগ থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন যায় আসেনা। তারা এখন প্রকাশ্যে ঘুওে বেড়াচ্ছেন।
এছাড়াও পটুয়াখালীর বাউফল, কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী, কুয়াকাটা সহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির অভ্যন্তরীন কোন্দলে সহিংষ ঘটনা ঘটছে। এমনকি বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যেও সংঘর্ষ হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন, ৫ আগষ্ট
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো: আনোয়ার জাহিদ সাংবাদিকদেও বিভিন্ন সময় বলেন, সর্বত্র আইন ব্যবস্থা ভাল রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি অপরাধীদেও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সনাক্ত করে আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট থেকে হামলা-দখলবাজি-চাঁদাবাজিতে পিছিয়ে নেই বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় মৎস্যজীবী দলের সভাপতি রুহুল আমিনকে ইট দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাদুল। গুরুতর আহত রুহুল এখনও ঢাকাতে চিকিৎসাধীন।
দলের ৩নং ওয়ার্ডের সভাপতি মাওলানা মো. হানিফ বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক সেলিম হাওলাদারের অরাজনৈতিক সুলভ কর্মকান্ডে আমরা সবাই অতিষ্ঠ। লতাচাপলী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১৮ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ১৫ জনই অনাস্থ দিয়েছি।
লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম হাওলাদার বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে যারা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না ।
গত ৪ জানুয়ারি সৈকতের তীরে মসজিদের সামনে উচ্ছেদকৃত জমিতে ফের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন পৌর শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি জসিম মৃধার নেতৃত্বে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী। এ সময় পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ বাঁধা দিলে তাকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয় তারা। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করলে বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অভিযানে বাধা দেয়। পিটিয়ে গুরুতর জখম করে ভেকু চালককে। এমনকি ইউএনও, অ্যাসিল্যান্ড, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশকে অবরুদ্ধ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। এ ঘটনায় মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আ.ন.ম মূরাদুল ইসলাম বাদী হয়ে বিএনপির ১৯ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ১০০ জনের নামে মামলা করেন।
৫ আগস্টের পর কুয়াকাটায় হোটেল সানরাইজসহ বেশ কয়েকটি দোকানপাট দখল করার অভিযোগ রয়েছে কৃষক দলের সভাপতি আলী হোসেন খন্দকারের বিরুদ্ধে। এছাড়া গত ১২ জানুয়ারি রাতে কুয়াকাটা চৌরাস্তা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক কেএম বাচ্চু খলিফা ও তাঁর বাবা ইউনুছ খলিফাকে পিটিয়ে জখম করে আলী হোসেন খন্দকার ও তাঁর ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী সম্রাটসহ পৗর শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি জসিম মৃধা ও তাদের ক্যাডারদের বিরুদ্ধে।
৫ আগস্টের পর পারিবারিক শত্রুতার জেরে সাংবাদিক নাসিরউদ্দিন বিপ্লবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর করা হয়। পরে তাঁর গ্রামের বাড়ির একটি ঘর ভেঙে নেয় এবং অপরটি দখল করেন। রাজনৈতিক পরিচয়ে ওই হামলায় নেতৃত্ব দেয় মহিপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আতিকুর রহমান মিলন ও লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান। নাসির উদ্দিন বিপ্লব তাঁর পরিবার নিয়ে এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে গত ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কুয়াকাটা পৌর বিএনপির মোবাইল ফোনে বাস কাউন্টার দখলে নেওয়ার কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন মিইল্লা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হইছে, ‘এইখানে বিআরটিসি বাসের কুয়াকাটা ও তুলাতলীর কাউন্টার ৯ ওয়ার্ডের বিএনপির কমিটি মিইল্লা ভোগ করবে’।
কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘যখন যারা ক্ষমতায় থাকে, তারাই তখন বিআরটিসির কাউন্টার ভোগদখলে নেয়। তাই বলেছি কাউন্টার বিএনপির লোকজনেই দেখভাল করবে।
কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসুল্লি বলেন, ‘এগুলো তো অনেক আগের ঘটনা। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমরা জিরো-টলারেন্স নীতিতে ইতোমধ্যে পৌর সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমানকে শোকজ এবং জসিম মৃধাসহ ৫ জনকে বহিস্কার করা হয়েছে।