পহেলা এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনের মধু আহরণ মৌসুম। এবার ঈদের কারণে মৌসুমের আনুষ্ঠানিকতা হবে ৭ এপ্রিল। তবে তার আগেই গত পহেলা এপ্রিল সকালে মধু সংগ্রহে ৪টি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশ করে বলে জানায় বনবিভাগ। দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বনজীবী মৌয়ালদের হাতে পাশ উঠিয়ে দেন বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহমুদা খানম, উপকূলীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল হালিম, সিপিজির সদস্য ইসমাইল হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের দেওয়া তথ্য মতে, ২০২৫ সালের মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৫শ' কুইন্টাল ও মোমের লক্ষ্যমাত্রা ৪০০ কুইন্টাল। পহেলা এপ্রিল বুড়িগোয়ালিনী ও কোবাদক স্টেশন থেকে ৯টি পাশ সংগ্রহ করেছে মৌয়ালরা। এরমধ্যে সকালে ৪টি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশ করেন।
মৌয়াল ফজলুল হক বলেন, ঈদের পর আনন্দের সাথে আশা নিয়ে যাচ্ছি মধু আহরণের জন্য কিন্তু অবৈধভাবে সুন্দরবন থেকে যে হারে মধু চুরি হচ্ছে জানি না আশানুরূপ মধু পাবো কিনা। অল্প জায়গায় মধু আহরণ করে আমাদের পরিবার পরিজনের ভরণপোষণ ও মহাজনের চালান ওঠানো কঠিন। তিনি আগামী দিনে অভয়ারণ্যগুলোতে মধু আহরণের অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। মৌয়াল ফজলুল হকের মতে, যে পরিমান মৌয়াল বনে যান তাদের জন্য মধু আহরণের এলাকা পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া অভয়ারণ্যে থেকে মধু আহরণ না করার ফলে মধুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল-ফিতরের কারণে এবছর জাকজমকপূর্ণ ভাবে পহেলা এপ্রিলে মধু আহরণের উৎসব হয়নি কিন্তু সীমিত পরিসরে মধু আহরণের জন্য পাশ দেওয়া হয়েছে মৌয়াল ও বনজীবীদের।
তিনি আরও বলেন, ২২-২৩ অর্থ বছরে সুন্দরবন থেকে মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করেছেন ১০২৩ কুইন্টাল এবং মোম সংগ্রহ করেন ৩০৬.৯০ কুইন্টাল। ২৯০টি পাশের মাধ্যমে ২০৪৬জন মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করে উক্ত মধু ও মোম সংগ্রহ করেন। পরবর্তী ২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩৬৪টি পাশের মাধ্যমে ২৪৭০ জন মৌয়াল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যায়। তাদের সংগৃহীত মধু ১২৩৫ কুইন্টাল এবং মোম ৩৭০ দশমিক ৫০ কুইন্টাল।