প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ধারাবাহিক বৃদ্ধিতে নতুন মাইলফলক গড়তে চলেছে বাংলাদেশ। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনেই রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৯৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সংগ্রহের দ্বারপ্রান্তে। ঈদুল ফিতরের আগে প্রবাসীরা স্বজনদের জন্য বিপুল পরিমাণে অর্থ পাঠাচ্ছেন, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকলে প্রথমবারের মতো ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করতে পারে প্রবাসী আয়।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য উত্থান দেখা যাচ্ছে। অর্থ পাচার হ্রাস, প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধি এবং সরকারি নীতিসমূহের ইতিবাচক প্রভাবের কারণে এ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম ১৫ দিনেই এসেছে ১৬৬ কোটি ডলার, যা ২২ মার্চ পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৩ কোটি ডলারে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত তা আরও বৃদ্ধি পেয়ে ২৯৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারে পৌঁছায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ২৫ ও ২৬ মার্চ দুই দিনে এসেছে ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারাকে শক্তিশালী করছে।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ফলে ডলারের সংকট কিছুটা কমেছে এবং বিনিময় হারও স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো ১২৩ টাকার মধ্যে প্রবাসী আয়ের ডলার কিনছে, যা আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে ১,৮৪৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৪% বেশি। ব্যাংকগুলো এখন প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রবাসী আয় সংগ্রহের প্রবণতা কমিয়ে এনেছে, ফলে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রিত রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারে। এটি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বড় ভূমিকা রাখবে।