জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া বানচালের লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত করতে একটি চক্র মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে। এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা রয়েছে, তা ইতোমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রসিকিউশন দল এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে যে অপচেষ্টা চলছে, তা প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের মূল কুশীলবদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, বুধবার (২ এপ্রিল) চিফ প্রসিকিউটর জানান, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা নিয়ে শেখ হাসিনার মামলার খসড়া তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “বিচারের স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করার যেকোনো চক্রান্ত কঠোরভাবে দমন করা হবে। আইন ও ন্যায়বিচারের পথেই অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কখনোই কোনো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। বিচারের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতেই আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছি।”
প্রসিকিউশন টিমের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তদন্তে উঠে আসা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র শুধু বিচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে না, বরং গণহত্যার শিকার পরিবারগুলোর ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা নষ্ট করবে।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, “দেশ-বিদেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, ইতিহাসের এই নৃশংস অধ্যায়ের বিচার যেন বাধাহীনভাবে সম্পন্ন হয়।”
অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম একযোগে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “আমরা এই বিচারকার্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি এবং অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে প্রয়োজনীয় সব আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্ধারিত আইনি কাঠামোর মধ্যেই বিচারিক প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে এবং কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের এই পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।”