মাগুরার নোমানী ময়দানে ৮ বছরের ধর্ষণের শিকার শিশুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ৭টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। এর মধ্যে ঢাক থেকে উপস্থিত হন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ দলের শীর্ষ নেতারা।
শিশুটির মৃত্যুর পর মাগুরা শহরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। শিশুটি মৃত্যুর আগের কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৬ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়, কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরবর্তীতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
তবে, ১৩ মার্চ, দুপুরে তৃতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার পর শিশুটির হৃদস্পন্দন আর ফেরেনি। তার মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। জানাজার আগে, ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যুর খবর শোনার পর জাতীয় নাগরিক পার্টি ও বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের নেতারা হাসপাতালে গিয়ে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক এবং এনসিপি নেতারা বলেন, “এই নৃশংস ঘটনার জন্য দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
গত ৮ মার্চ রাতে শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিশুটির জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
ধর্ষণের ঘটনার পর, মামলা দায়ের করা হয় এবং তদন্তের অংশ হিসেবে তিন আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবে আসামিদের ডিএনএ নমুনা জমা দেয়া হয়, পাশাপাশি শিশুটির ডিএনএ নমুনাও পরীক্ষা করা হয়।
শিশুটির মৃত্যু এবং এই ঘৃণ্য ঘটনার পর, স্থানীয় ও জাতীয় স্তরে তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা ন্যায়বিচারের জন্য কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।