মাদকের সহজলভ্যতায় দেশে ধর্ষণ বাড়ছে। কারণ মাদক সেবনের পর চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধে জড়ানোর মানসিকতাও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ইয়াবা ও হেরোইন সেবনকারীদের মধ্যে ধর্ষণের প্রবণতা বেশি। গ্রেফতার হওয়া মাদকাসক্ত ধর্ষকরাও স্বীকার করেছে, ইয়াবা ও হেরোইন সেবনের পর হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। বর্তমানে দেশজুড়ে মাদকের অবাধ বিস্তারে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ধর্ষণের ঘটনাও। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ধর্ষণ, ধর্ষণ-পরবর্তী হত্যা ও খুনের ঘটনার সঙ্গে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে মাদকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। স্বাস্থ্য ও মনো বিশেষজ্ঞ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে মাদকের বিস্তার ভয়াবহ। যে কারণে দেশে যতো ধরনের অপরাধ রয়েছে তার মধ্যে মাদক মামলার আসামিই সবচেয়ে বেশি। দেশে প্রতিবছর ৫০ হাজারের বেশি মাদক মামলা হয়। অন্য কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে এমন নজির নেই। তার মধ্যে ইয়াবা ও হেরোইন সেবনকারীদের মধ্যে ধর্ষণের প্রবণতা বেশি।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সারা দেশে ৩ হাজার ৬৩২টি মাদকের মামলা হয়। ওই মাসে ডাকাতির ৭৪টি, দস্যুতার ১৫৩টি, খুনের ৩০০টি, দ্রুত বিচার ৮৩টি, রায়ট ১০টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের এক হাজার ৪৩০টি, অপহরণ ৭৮টি, পুলিশ অ্যাসাল্ট ৩৭টি, চুরির মামলা ৬৭৩টি, অস্ত্র মামলা ১০১টি, বিস্ফোরক মামলা ৩৭টি, চোরাচালানের ১৪৩টি মামলা হয়েছে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মামলা ছিল চার হাজার ৩৮৬টি। তাছাড়া ২০২৩ সালে দেশে ৭৬ হাজার ৪০৩টি মামলা হয়। আর ২০২৪ সালে মামলা ছিল ৫২ হাজার ৭১৭টি।
সূত্র আরো জানায়, মাদক মানুষকে ধর্ষক হতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ইয়াবা সেবনের পর তার মনুষ্যত্ব লোপ পেতে থাকে, পাশাপাশি যৌন আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়। তাতে মাদকাসক্তরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে জড়িয়ে পড়ছে ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজে। মাদকসেবীদের রোগী বিবেচনা করে তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। সেজন্য যথাযথ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থাকা জরুরি হলেও তা এদেশে নেই।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি ইনামুল হক সাগর জানান, দেশে যতো ধরনের অপরাধ রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাদক মামলার আসামি। ফলে গ্রেপ্তারকৃত আসামির মধ্যে মাদক মামলার আসামিই বেশি। প্রতিবছর ৫০ হাজারের বেশি মাদক মামলা হয়। অন্য কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে এমন নজির নেই।