মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় ক্রমান্বয়ে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৩৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় আহতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৫০ এবং নিখোঁজ রয়েছেন ২২০ জন।
শনিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেওয়া এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিভিন্ন সহায়তা সংস্থা ও স্থানীয় গোষ্ঠীর উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মিয়ানমার সফররত জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার।
বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক সংস্থা ‘সাহস, দক্ষতা ও দৃঢ় সংকল্পের’ সঙ্গে ভূমিকম্প-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছে। অনেকে নিজেরাই সবকিছু হারিয়েছেন, তবুও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় নেমে পড়েছেন,সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফ্লেচার শুক্রবার রাত কাটিয়েছেন গত ২৮ মার্চ আঘাত হানা ৭ দশকিম ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের কাছে অবস্থিত মান্দালয় শহরে; ভূমিকম্পে মিয়ানমারের এ দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের ক্ষয়ক্ষতিই সবচেয়ে বেশি হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা যেসব এলাকার লোকজন তাদের সমর্থন করছে না সেসব এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে বলে শুক্রবার অভিযোগ করছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়।
বিমান হামলাসহ বিরোধীদের ওপর জান্তার চালানো ৫৩টি হামলার খবর নিয়ে তদন্ত শুরুর কথাও জানিয়েছে তারা, এর মধ্যে ১৬টি হামলা বুধবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং রাজধানী নেপিদোতে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বিরল এ বিদেশ সফরে জান্তাপ্রধান আলাদা আলাদাভাবে থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
এর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি ডিসেম্বরে মিয়ানমারে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন আয়োজনে পরিকল্পনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
মোদী মিয়ানমারে ভূমিকম্প পরবর্তী সাময়িক যুদ্ধবিরতিকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মিয়ানমারে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য’ নির্বাচন আয়োজনের ওপরও জোর দিয়েছেন, শুক্রবার এমনটাই বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।
মিয়ানমারের জান্তা ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়েছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, জান্তার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রক্সিদের দিয়ে নির্বাচন করিয়ে জেনারেলদেরই ক্ষমতায় রাখা।