টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা

এফএনএস (ঝালকাঠি) : : | প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৮:১৭ এএম : | আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা

ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্সেও সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম তালুকদার পূবালী ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে যাবার সময় বিএনপির অংগসংগঠনের নেতাকর্মিরা আটকে রেখে লাঞ্চিত করেন। খবর পেয়ে বিএনপির অপর একটি গ্রুপ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মনির তালুকদারকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠি পৌর বিএনপি সাধারন সম্পাদক আনিচুর রহমান তাপুর বিরুদ্ধে। এসময় তার সাথে থাকা ব্যবসায়িক পার্টনার জহিরুল ইসলাম জুয়েলকে মারধর করে বিএনপির কর্মীরা। খবর শুনে ঝালকাঠি সদর থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও মনির তালুকদারকে ধরতে পারেনি। ৩ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে শহরের পুবালী ব্যাংকের নীচে এ ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠি সদর থানায় মনির তালুকদারের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা রয়েছে। আওয়ামলীগ সরকার পতনের আগে মনিরুল ইসলাম তালুকদার কানাডায় চলে গেছেন বলে তার ঘনিষ্ট জনরা জানিয়েছিল। তাই এ পর্যন্ত তাকে ঝালকাঠি বা কোথাও দেখা যায়নি। তবে কিছু দিন আগে ঢাকা সেনা কুঞ্জের এক বিবাহের অনুষ্ঠানে তার দেখা মেলে। যে ছবি সামাজিক মাধ্য ভাইরাল হলে তিনি আবার আত্মগোপনে চলে যান। বর্তমানে তিনি ৪ ও ৫ আগষ্টের হামলাসহ বিভিন্ন ঘটনায় ঝালকাঠিতে দায়ের হওয়া একাধিক মামলার আসামী। অভিযোগ রয়েছে বিএনপির একটি গ্রুপকে ম্যানেজ করে খুব গোপনে কয়েকবার তিনি ঝালকাঠি এসেছিলেন।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে মনির তালুকদার টাকা তুলতে পুবালী ব্যাংকে যান। টাকা নিয়ে নীচে নামার সাথে সাথে বিএনপি দলীয় নেতা কর্মীরা তাকে চর লাথি ঘুষি দিতে শুরু করে। এ সময় তার জামা ছিড়ে ফেলে এবং সাথে থাকা টাকা নিয়ে ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে হামলাকারিরা পুলিশে খবর না দিয়ে তাকে একটি দোকানে বসিয়ে রাখে। মনির তালুকদারের সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মটরসাইকেলে চলে যেতে সহায়তা করে উপস্থিত বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান তাপু ও তার সমর্থকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় ঘটনা স্থলের সিসি ফুটেজ দেখলেই জড়িতদের সনাক্ত করা যাবে । এ প্রসঙ্গে মনির তালুকদারের সাথে থাকা ডেইলী সান পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম জুয়েল জানান, আমি ও মনির ভাই এক সাথে পূবালী ব্যাংকে এসে ছিলাম টাকা তোলার জন্য। কারণ তিনি একটি অনলাইন পোর্টাল পত্রিকার প্রকাশক মনির ভাই। এই পত্রিকার সাংবাদিকদের বেতনের টাকা উঠাতে তিনি আমাকে আসতে বলেন। কিন্তু ব্যাংকের নিচেনা মার সাথে সাথে বিএনপির নেতা কর্মীরা আমাকে যেতে বলায় আমি চলে যাই। তখন দেখছি বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান তাপু ভাই একটি কাপড়ের দোকানে নিয়ে যায় মনির ভাইকে। এ বিষয়ে ঝালকাঠি শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান তাপু বলেন, আমি খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাই। আমি যাওয়ার সাথে সাথে তাকে নিয়ে মোটর সাইকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিএনপির একটি গ্রুপ একটি মনির তালুকদারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকে সেফ করেছেন। এ ঘটনার সাথে যে বিএনপি নেতা বা কর্মীরা জড়িত রয়েছে, অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনার সাথে বিএনপির ৬ নেতা জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। গোয়েন্দা বিভাগও ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে যানা যায়। এ ব্যপারে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে থাকা) এ্যাড. মিজানুর রহমান মবিন বলেন এমন ঘটনা শুনেছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।   এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, আমি ফেসবুকে দেখেছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমি পুবালী ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা উঠিয়েছি। চলে যাওয়ার সময় বিএনপি নেতা আনিচুন রহমান তাপু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুবেল ফকিরসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা আমাকে আটকে রেখে টাকা দাবী করে। আমার সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়। টাকা নিয়ে আমাকে ওখান থেকে বের করে দেয়া হয়।   ঝালকাঠি থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, মনির তালুকদার মামলার আসামী। তিনি ঝালকাঠি আসছেন খবর শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ যাওয়ার আগেই তিনি চলে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে