প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। তবে ছুটি না পাওয়ার কারণে যারা ঈদের আগে বাড়ি যেতে পারেননি, তারা এখন গ্রামের পথে রওনা হচ্ছেন। ঢাকার বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বেশি থাকলেও এখনও অনেকেই গ্রামের পথে ছুটছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, বাস কাউন্টারগুলোতে অতিরিক্ত ভিড় নেই। যাত্রীরা সহজেই টিকিট কেটে গন্তব্যে যেতে পারছেন। যেসব বাস ঢাকার বাইরে যাচ্ছে, সেগুলো তুলনামূলক কম যাত্রী নিয়েই ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ঢাকামুখী বাসগুলো বেশিরভাগই পূর্ণ যাত্রী নিয়ে ফিরছে।
দর্শনা ডিলাক্স পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার ইসমাইল জানান, সকাল থেকে ৮টি বাস ছেড়ে গেছে। যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারছেন।
গ্রীন লাইন পরিবহনের কর্মী আব্বাস বলেন, “এখন ৩০-৪০ জন যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রী সংখ্যা কম হলেও বাস চলাচল অব্যাহত আছে, কারণ ঢাকার বাইরে থেকে ফেরার পথে অধিকাংশ সিট বুকিং করা থাকে।”
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কর্মী মাসুদ জানান, “আজও অনেকে বাড়ি যাচ্ছেন। তবে যাত্রীদের তুলনায় ফিরতি বাসগুলোর চাপ অনেক বেশি।”
ঢাকার পান্থপথের বাসিন্দা মনজুরুল ইসলাম বলেন, “ঈদের সময় অফিস থাকায় বাড়ি যেতে পারিনি। এখন ছুটি পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি। বাস বা টিকিট কোনো কিছুতেই ভোগান্তি নেই।”
শেখেরটেকের বাসিন্দা পারভেজ হাসান বলেন, “পরিবারসহ ঢাকায় ঈদ করেছি। এখন গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাচ্ছি। ঈদের আগে ভিড় ও যানজট এড়াতে আমরা পরে যাচ্ছি।”
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনেও ফিরতি যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে দেখা যায়, বেশিরভাগ যাত্রী ঢাকায় ফিরছেন, তবে অনেকেই এখনও গ্রামের পথে ছুটছেন।
রেলওয়ের তথ্য সেবা কর্মকর্তারা জানান, ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ১২টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। যাত্রীদের চাপ থাকলেও ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যাচ্ছে।
কমলাপুর রেলস্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঈদের সময় কাজ থাকায় বাড়ি যেতে পারিনি। এখন দুদিনের ছুটি পেয়েছি, তাই বাড়ি যাচ্ছি।”
একই কথা বলেন ঢাকার রেস্টুরেন্টকর্মী আহাদ। তিনি বলেন, “ঈদের সময় আমাদের ব্যস্ততা থাকে। এখন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে বাড়ি যাচ্ছি।”
এদিকে ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা জানান, তাদের যাত্রা খুব বেশি কষ্টকর হয়নি, তবে ট্রেন ও বাসগুলো বেশিরভাগ সময় পূর্ণ ছিল। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার তাগিদ থাকায় আগামী কয়েকদিন ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।