মিয়ানমারে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশ ছোঁয়া দাম। বাজারে সরবরাহও অনেক কম। আমদানি করার মতো যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা নেই জান্তা সরকারের হাতে। মুদ্রার মান এতটাই কমে গেছে যে, যাদের জমানো টাকা ছিল সেগুলো এখন প্রায় কাগজে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতি জান্তা সরকারের ওপর সাধারণ নাগরিকদের আরও ক্ষুব্ধ করে তুলছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে চলছে গৃহযুদ্ধ। অর্থনীতির ভেঙে পড়ার দশা। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে চাল এবং ভোজ্যতেলের। মিয়ানমারের মানুষের প্রধান চাহিদাই এ দুটি ভোগ্যপণ্য। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে উৎকৃষ্ট মানের চালের দাম ছিল প্রতি বস্তা ১৬ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারি নাগাদ তা বেড়ে ৪৪ দশমিক ২০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। সে হিসাবে তিন বছরে দাম বেড়েছে ১৬০ শতাংশের বেশি। ভোজ্য পামতেলের দামও তিন বছরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। মোটামুটি সামর্থ্যবান যারা চিনাবাদামের তেল খেতেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই আর এই তেল কেনার সামর্থ্য নেই। তাঁরা রান্নায় বিকল্প তেল ব্যবহার করছেন বা চিনাবাদামের তেলের সঙ্গে অন্য তেল মেশাতে বাধ্য হচ্ছেন। ভোজ্য পামতেলের দামও তিন বছরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। মোটামুটি সামর্থ্যবান যারা চিনাবাদামের তেল খেতেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই আর এই তেল কেনার সামর্থ্য নেই। তাঁরা রান্নায় বিকল্প তেল ব্যবহার করছেন বা চিনাবাদামের তেলের সঙ্গে অন্য তেল মেশাতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে পাচারকারীরা উঠেপড়ে লেগেছে এসব পণ্য পাচারের কাজে। বাংলাদেশের সঙ্গে দামের বড় পার্থক্যের কারণে অতিমুনাফা লাভের আশায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাচারকারী চক্র। সুযোগ বুঝে এ চক্রটি বৈদেশিক মুদ্রায় কেনা জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্য সাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অবাধে পাচার করছে মিয়ানমারে। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে যেমন যাচ্ছে স্থলপথে, তেমনি কোস্ট গার্ড বা অন্যান্য বাহিনীর নজর এড়িয়ে যাচ্ছে জলপথেও। সীমান্তসংলগ্ন এলাকা, এমনকি কক্সবাজার জেলা শহরের অনেক মুদি দোকানেই সয়াবিন তেলের সংকট প্রবল। কোনো কোনো দোকানে দুই হাজার টাকার পণ্য কিনলে সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের একটি বোতল কেনা যায়। তার পরও অনেক দোকানে দাম বেশি রাখা হয়। এর কারণ পাচারকারীরা নির্ধারিত দামের (৮৫০ টাকা) প্রায় দ্বিগুণ দামে এসব বোতল কিনে নিয়ে যায়। জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেলসহ অনেক পণ্য কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়। এসব পণ্য এভাবে পাচার হওয়ায় জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।