দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে এক শিশুকে অপহরণ করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে দুই ব্যক্তি। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সেই দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে মুক্তিপণের চার লাখ টাকাও উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিকশা জব্দ করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বোয়ালখালী থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) মো. আরিফুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ মার্চ দুপুরে উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের নজর মোহাম্মদ বাড়ির নুরুল আজিমের ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মো.আফরান নুর আবির (৮) নিখোঁজ হয়। সন্তানকে না পেয়ে বোয়ালখালী থানায় আবিরের পিতা সাধারণ ডায়েরি করেন। ওইদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে আবিরের পিতার মোবাইলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বার্তা দেয় অপহরণকারীরা। তারা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিতের জন্য আবিরের একটি ছবিও পাঠায়। এরপর অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী টাকা প্রদানে রাজি হলে তারা মোবাইল ব্যাংকিং এর একটি নগদ নাম্বার দেয়। বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের শনাক্ত করে।
এরমধ্যেই ২৬ মার্চ দুপুরে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে নগরের চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকার একটি মাদ্রাসা সামনে থেকে আবিরকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর শিশুটির পিতা বোয়ালখালী থানায় মামলা দায়ের করলে রাতে অভিযান চালিয়ে বাঁশখালীর দক্ষিণ সাধনপুর সওদাগর পাড়ার লাইলা বাপের বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল আলমকে (৩৬) গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহৃত অটোরিকশা জব্দ করা হয়। অপরদিকে যশোরের বেনাপোল থানার দুর্গাপুর গ্রামের মো.আয়াতুল্লাহর ছেলে মো. ইকবালকে (২৭) মুক্তিপণের টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধারে প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হয়েছিলো খুবই সতর্কতার সাথে। নানা ধরনের ফাঁদ তৈরি করতে হয়েছিল। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা ডিবি পুলিশ, বাঁশখালী থানা পুলিশ, যশোর জেলার শার্শা থানা পুলিশসহ একাধিক টিম বোয়ালখালী থানা পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপহরণের ঘটনা জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।