ঈদের পর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী। মূলত চক্রের কারসাজিতেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। যেমন, সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও খুচরা বাজারে আলু ও মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ডজনপ্রতি ৬-৭ টাকা। এছাড়া ঈদের পর একরকম নীরবে পেঁয়াজের দামও বাড়ানো হয়েছে। চড়ামূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে আদা ও রসুন। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে সবজির দামও বাড়তির খাতায় নাম লিখিয়েছে। মুরগির দাম কিছুটা কমলেও সব ধরনের মাছ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। সারা দেশেই এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বস্তুত রোজায় পণ্যের দাম কম থাকায় জনমনে কিছুটা স্বস্তি মিললেও ঈদের পর একে একে সব ধরনের পণ্যের দামই বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে উচ্চশ্রেণির মানুষের ভোগান্তি না হলেও মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ে। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় তা দিয়ে তাদের চাহিদা মেটাতে কষ্ট হয়। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে, বাজার তদারকি জোরদার করে অসাধুদের আইনের আওতায় আনা। সার্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্নআয়ের মানুষ যে কষ্টে আছেন, তা বলাই বাহুল্য। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে যে হারে দাম বাড়ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দেখছি, ঠুনকো অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছে। খুচরা বাজারে ক্রেতারা সেসব পণ্য অস্বাভাবিক দাম দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা মনে করি, বাজারে সঠিক তদারকির অভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। এ কারণে বাজারে সার্বক্ষণিক নজরদারি প্রয়োজন। সিন্ডিকেট ভাঙতে নিতে হবে শক্ত পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকারের মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। রাঘববোয়ালরা তো বটেই, বাজার অস্থিরতায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধ লোকদেখানো নামমাত্র জরিমানা ধার্য নয়, কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে বিধান পরিবর্তন করে হলেও। ডিজিটাল এই যুগে কৃষকদের কথা চিন্তা করে মাঠপর্যায় থেকে সবজিসহ নিত্যপণ্য কীভাবে সরাসরি খোলাবাজারে সরবরাহ করা যায়, সে পথও খুঁজে বের করতে হবে। আমরা আশা করি, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।