মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ: জাতির শ্রদ্ধা ও সমর্পণের দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২:০১ এএম
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ: জাতির শ্রদ্ধা ও সমর্পণের দিন

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা করেছিল, যা পরে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের দিকে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়। এটি শুধু একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা নয়, বরং একটি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের অমোচনীয় স্বীকৃতি।

এ দিনটি ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত, যেখান থেকে জাতি স্বাধীনতার অঙ্গীকারে একত্রিত হয়ে সংগ্রামে নেমেছিল। যদিও স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিতর্ক রয়েছে, তবে মেজর জিয়াউর রহমান (যিনি পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি হন) চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে গণহত্যা শুরু করলে, মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তার পরের দিন ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা, শিশু সদন, হাসপাতাল ও কারাগারে বিশেষ খাবার বিতরণ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মহান স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন উপলক্ষে সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। নিরাপত্তার চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে শ্রদ্ধা নিবেদনের এই মহান অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যাতে দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণেরপাশাপাশি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতা, সামাজিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করবেন এবং তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, স্বাধীনতা দিবসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে, যাতে সবাই মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস শুধু আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন নয়, এটি আমাদের জাতির ঐক্য ও সমৃদ্ধিরও প্রতীক। এই দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয়, দেশের জন্য জীবনদানকারী শহীদদের প্রতি আমাদের চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকার দায়িত্ব।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে