মোংলা বন্দরকে বাণিজ্য হাবে পরিণত করতে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন জেটি

এফএনএস এক্সক্লুসিভ : | প্রকাশ: ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:০৩ এএম
মোংলা বন্দরকে বাণিজ্য হাবে পরিণত করতে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন জেটি

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলাকে বাণিজ্য পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ওই লক্ষ্যে সরকার আরো ৬টি জেটি নির্মাণ করছে। এর মধ্যে মোংলা বন্দর উন্নয়নে ৩ ও ৪ নম্বর জেটির কাজ ৬২ শতাংশ শেষ হয়েছে। ওই দুটি জেটি নির্মাণে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। আর ১ ও ২ নম্বর জেটি নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তাছাড়া ১১ ও ১২ নম্বর জেটি নির্মাণে প্রাথমিক কাজ বন্দর কর্তৃপক্ষ শেষ করেছে। ওই ৬ জেটি নির্মাণ হলে মোংলা বন্দরে তৈরি হবে আরো ১ কোটি ৫০ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সাম্প্রতিককালে মোংলার সমুদ্রবন্দর ওপর পণ্য আমদানি-রপ্তানির চাপ বেড়েছে। কারণ ওই বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে ফেরি পারাপারের ঝক্কি-ঝামেলা না থাকা, সড়ক পথে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় পণ্য আনা-নেয়া ও সরাসরি রেল সংযোগ থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকার দেশের দ্বিতীয় লাইফ লাইন মোংলা বন্দরকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আঞ্চলিক হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাচ্ছে।

সূত্র জানায়, মোংলা বন্দরের কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডেলিং তিন দশকের অধিক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছিল। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর ফেরি পারাপারের ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় সড়ক পথে মোংলা বন্দর থেকে পণ্য আনা-নেয়ার সুযোগ হয়েছে। তাছাড়া সরাসরি রেল সংযোগও চালু হয়েছে। একই সাথে বন্দরটির ওপর চাপ বাড়ায় পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন হয়েছে। আর ভৌগোলিক দিক দিয়ে মোংলা বন্দর কৌশলগত ও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ পুরো দেশের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর মালামাল ওই বন্দরের মাধ্যমে পরিবহন হয়। ওসব কারণে বন্দরের চাপ বেড়ে যাওয়ায় জেটি সমপ্রসারণ জরুরি হয়ে পড়ে। আর ৮টি জেটি নির্মাণ হলে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের কাজে গতি পাবে এবং মোংলা বন্দর বড় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক হাবে পরিণত হবে। মোংলা বন্দরে জেটির সংখ্যা বাড়ানো হলে জাহাজ চলাচল এবং পণ্য হ্যান্ডেলিং বাড়বে। তাতে বন্দরের রাজস্ব আয় বাড়বে। ব্যবসায়ীরাও ওই বন্দর দিয়ে পণ্য সহজে খালাস করতে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমাতে হলে মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিকায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।

এ প্রসঙ্গে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানান, বন্দরের জেটিসহ চারটি প্রকল্পে কাজ চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে (জেটি-সংলগ্ন) ড্রেজিং শেষ হলে বন্দরের জেটিতে ১০ মিটার পর্যন্ত ড্রাফটের (গভীরতা) জাহাজ হ্যান্ডলিং সুবিধা তৈরি হবে। বন্দর এখন আগের চেয়ে গতিশীল। কনটেইনারবাহী জাহাজের আগমন বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ, কার্গো পরিবহনে ৯ দশমিক ৭২ ভাগ, কনটেইনার পরিবহনে ১৬ দশমিক ৭৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তাছাড়া মোংলা বন্দর দিয়ে ১৩ শতাংশ বেড়েছে গাড়ি আমদানি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে