সাটুরিয়ায় বিদ্যালয় স্থানান্তরের প্রতিবাদে সভা ও মানববন্ধন

এফএনএস (মোতালেব; সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ) : : | প্রকাশ: ২২ মার্চ, ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম
সাটুরিয়ায় বিদ্যালয় স্থানান্তরের প্রতিবাদে সভা ও মানববন্ধন

সাটুরিয়া উপজেলার ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে স্থানান্তর করে পশ্চিম পাশে না নেওয়ার প্রতিবাদে সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১১ টার দিকে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবিদ ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সহস্রাধিক মানুষ অংশ গ্রহণ করে। 

প্রতিবাদ সভায় মুয়াজ্জেম হোসেলা তোলা মাস্টারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন, ১নং যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আযাদ বিপ্লব, সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মহসিন উজ্জজামান, যুবদলের সদস্য সচিব মো. ফরিদ বরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান স্বিপন, বিদ্যালয়ের জমিদাতা মিজানুর রহমান, আব্দুল মজিদসহ আরও অনেকেই। 

বক্তারা বলেন, উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নটি ধলেশ্বরী নদী দ্বারা শাসিত। এখানকার বেশীর এলাকা চরাঞ্চল। বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রামে আশে পাশে কোন বিদ্যালয় নেই। সেই আলোকে ২০১৫ সনে সর্বস্তরের জনসাধারণের কথা চিন্তা করে ছনকা গ্রামে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে চরাঞ্চলের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সুবিধা পেতে শুরু  করে।  পরবর্তীতে বিদ্যলয়টি ২০২২ এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু  মো. শাজাহান এবং আব্দুল ছালাম মিলে এলাকার মানুষের সাথে কথা কাটা কাটির একপর্যায় বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে নেবার পায়তারা করে। বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে থাকলে বরাইদ ইউয়িনের ৫ টি ওয়ার্ডের মানুষ সুবিধা পাচ্ছে। ্আর পশ্চিম পাশে নিয়ে মাত্র ১ টি ওয়ার্ডের আংশিক লোক সুবিধা পাবে। বক্তারা আরো বলেন, কতিপয় স্বার্থান্বেশী মহল, নদীর পশ্চিম পাশে বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য জমি ক্রয় করে এবং নতুন একাডেমিক ভবন তৈরি করার জন্য পায়তারা করছে।  আজ প্রাথমিক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন হল। আগামীকাল রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরারব স্মারক লিপি প্রদান করা হবে। এরপর স্থানান্তর কাজ বন্ধ না হলে কঠিন আন্দোলন করা হবে।

প্রতিবাদ সভা শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, রাজনীতিবীদ ও এলাকাবাসী মিলে সহস্রাধিক লোক অংশ গ্রহণ করে। 

 এতে সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ খান মজলিশ মাখন বলেন, বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গন স্বীকার হলে স্থানান্তর করার বিধান রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসরা বরাইদ ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ডের মানুষের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নাজুক করতে স্থানান্তরের পায়তারা করতেছে। 

বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহিমা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি যেখানে নিতে চাচ্ছে তার নিকটেই একটি বাজার আছে। সেখানে গেলে আমাদের বখাটে দের খপ্পরে পড়তে হবে। তাছাড়া খেয়া পারাপার হতে হবে। খেয়া পারাপার হতে গেলে আমাদের ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেশী সময় লাগবে। তাই আমরা চাই বিদ্যালয়টি এখানেই থাকুক। 

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তর বিষয়ে মানিকগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে বিগত ২৩-০২-২০২৫ তারিখে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং- ২১/২০২৫। মামলা থাকার পরও চক্রটি বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আসাউদ জামান বলেন, বিদ্যালয়ের পক্ষে একটি পক্ষ নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হওয়ার আংশকা আছে এমন একটি চিঠি দেয় কয়েকবছর আগে। তখনকার কমিটিসহ বিভিন্ন টিম তার সত্যতা পায়। বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করার জন্য নতুন একটি জমি দেখায়। পরে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় স্থানান্তর করার জন্য মন্ত্রণালয় ও ডিজি অফিস থেকে চিঠিও আসে। পরে শুনলাম ছনকা গ্রামের বেশীর ভাগ লোক চাচ্ছে বিদ্যলয়টি বর্তমান স্থানেই  থাকুক এবং এর জন্য একটি মামলা দায়ের করেছে। এখন আদালত এবং মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবে বিদ্যালয় কোথায় থাকবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে