নামের মিলের কারণে ১৩ দিন কারাবরণ করতে হয়েছে নির্দোষ দিনমজুর মাহাবুলকে। মাদক মামলার আসামি মাহাবুবের জায়গায় গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হয় তাকে। ঘটনার মধ্যে দিয়ে আবারও প্রমানিত হলো।মাহাবুল (২৮), উপজেলার মাইলবাড়িয়া পশ্চিমপাড়ার শাহার আলমের ছেলে। একদিন দুপুরে কাজ থেকে ফিরে ভাত খেতে বসেন। ঠিক সে সময় মহেশপুর থানার সহযোগিতায় দামুড়হুদা থানার এসআই মেজবাহুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে আটক করে। পরিবারের লোকেরা ও এলাকাবাসী পুলিশকে জানায়, মাহাবুলের বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। কিন্তু পুলিশের কোনো কথাই শোনা হয়নি। পরদিন তাকে চুয়াডাঙ্গা আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে থানা পুলিশ আদালতে ভুল শনাক্তের প্রতিবেদন দাখিল করলে ১৩ দিন পর নির্দোষ মাহাবুল জামিনে মুক্তি পান।মাদক মামলার আসামি মাহাবুব হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও একই গ্রামে দুই জনের নাম মিল থাকার কারণে এই ভুলটি ঘটেছে। আসল মাদক কারবারি মাহাবুবের বাবার নাম আলী বক্র, আর মাহাবুলের বাবার নাম শাহার আলম।এ ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ আসল মাদক কারবারি মাহাবুবকে ধরতে না পেরে শুধুমাত্র নামের মিলের কারণে মাহাবুলকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মতে, মাহাবুল একজন নিরীহ দিনমজুর, মাদক ব্যবসার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।স্থানীয় আজিজুর রহমান বলেন, মাহাবুল কখনোই মাদক ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিল না। আমাদের গ্রামে একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি আছেন, তার নাম মাহাবুব। পুলিশ নামের ভুলে একজন নির্দোষ ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।’ মাহাবুলের মা তহমিনা বলেন, ‘আমার ছেলে নির্দোষ ছিল, তবুও তাকে ধরে নিয়ে গেছে। কিছু ব্যক্তি প্রতিহিংসার কারণে পুলিশকে দিয়ে আমার ছেলেকে জেলে পাঠিয়েছে।মাহাবুল অভিযোগ করে বলেন, নির্দোষ হয়ে আমি ১৩ দিন জেল খেটেছি। মিথ্যা মাদক মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। এখনো আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। আমি সঠিক বিচার চাই। এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা দামুড়হুদা থানার এসআই মেজবাহুর রহমানের কাছে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তার ভুল হওয়ার কথা নয়। আসামী ধরার সময় নাম এবং বাবার নাম মিলতেই হবে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার মানুষ হতাশ, কেননা নামের ভুলে একজন নির্দোষ মানুষকে ১৩ দিন কারাগারে থাকতে হয়েছে, অথচ প্রকৃত মাদক কারবারি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।