অপহরণ বাণিজ্য বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা জরুরি

সম্পাদকীয় : | প্রকাশ: ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
অপহরণ বাণিজ্য বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা জরুরি

নানা অপকর্মে জর্জরিত কক্সবাজার এখন পরিণত হচ্ছে অপহরণের বাণিজ্যেই। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মাঝে আতঙ্কের শেষ নেই। অথচ মানুষ ভ্রমণ করতে দূর দূরান্ত থেকে কক্সবাজার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। যখন মনে আনন্দ উপভোগের জোয়ার ঠিক তখনি যদি পড়তে হয় অপহরণের ফাঁদে তখন বিষয়টি কেমন দাঁড়ায়। নিশ্চয় এটি উদ্বেগের বিষয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকার খবরাখবরে এমন তথ্য ভেসে উঠে। পত্রিকা থেকে জানা যায়, রোহিঙ্গার চাপ, ইয়াবাসহ মাদকে সয়লাব হওয়া কক্সবাজারের টেকনাফে নতুন করে দেখা দিয়েছে অপহরণ আতঙ্ক। টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় দিন দিন বাড়ছে অপহরণের ঘটনা। অনেকের মতে, এটা এখন ওপেন সিক্রেট।  ১ বছরে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় দেড় শ মানুষ অপহরণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন ৭৮ জন। আর্থিকভাবে সচ্ছল বা প্রবাসে আত্মীয়স্বজন রয়েছেন এমন মানুষকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আগে প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধারের চেষ্টা করত। কিন্তু তাতে হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় অপহৃতের জীবন বাঁচাতে স্বজন-পরিবার এখন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়াই নিরাপদ মনে করে। সমপ্রতি টেকনাফে অপহৃত ৯ কৃষক দুই দিন পর জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন। এর আগে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক তরুণী কক্সবাজার থেকে ৩ যুবককে টেকনাফে ডেকে নিয়ে অপহরণকারী চক্রের হাতে তুলে দেয়। মুক্তিপণ না পেয়ে তারা তিনজনকেই খুন করে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত এবং অপার নৈসর্গিক সৌন্দর্যখ্যাত অন্যতম পর্যটন-আকর্ষণ কক্সবাজার। এ শহর অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত কখনও কাম্য নয়। হিংস্র চক্রের হাতে জিম্মি হতে পারে না সাধারণ মানুষ। কারণ তাতে শুধু অর্থ বা প্রাণহানি নয়, দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পর্যটন-বাণিজ্যে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব। এতে আস্থা হারাবেন পর্যটকরা। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বর্তমান সরকারকে কঠোর অবস্থান অবলম্বন করা জরুরি বলে আমরা মনে করছি। টেকনাফসহ গোটা কক্সবাজারে মাদক কারবার, অপহরণ, খুন-ধর্ষণসহ সব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা স্বাধীন দেশের মানুষ স্বাধীনভাবেই তো চলাফেরা করবে। নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে কেনো স্বাধীন মানুষ। এর যথার্থ উত্তর সরকারকেই দিতে হবে। আমরা আশা করব, সরকার অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে অতিশীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করে, সর্বোচ্চ আইন প্রয়োগ করবেন। 

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW