আইপিএল যেন ম্যাচ উইনার তৈরির কারখানা। প্রতি বছর আইপিএল আসে আর নতুন নতুন ম্যাচ উইনার তৈরি হয়। এবার যেমন আসরে নিজের প্রথম ম্যাচেই তাক লাগিয়ে দিলেন দিল্লী ক্যাপিটালসের আশুতোষ শর্মা। প্রায় হারতে বসা এক ম্যাচে লক্ষ্নৌ সুপারজায়ান্টসের বিপক্ষে দিল্লী ক্যাপিটালসকে ১ উইকেটে জিতিয়েছেন আশুতোষ। ৫ ছক্কা, ৫ চারে ৩১ বলে ৬৬* রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছেন আশুতোষ। ৪ বলে যখন ৫ রান দরকার, সেই মুহূর্তে আশুতোষের ছক্কায় জিতেছে দিল্লী। এই আশুতোষ ছক্কা হাঁকানোর জন্য বেশ বিখ্যাত। টি-টোয়েন্টিতে ৩২ ম্যাচে ৬১ ছক্কা হাঁকিয়েছেন আশুতোষ। ছক্কা মেশিন হয়ে ওঠার আগে অবশ্য জীবনের গল্পটা বেশ কঠিন ছিল আশুতোষের জন্য। একটা সময় খাবারের অর্থ যোগানোর জন্য খেলার পাশাপাশি আম্পায়ারিংও করতে হয়েছে তাকে। আশুতোষের জন্ম ভারতের মধ্য প্রদেশের রাতলামে। শহরে ক্রিকেট খেলার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ছিল না। ফলে মাত্র ৮ বছর বয়সে শহর ছেড়ে ইন্দোরে গিয়ে থাকতেন আশুতোষ। ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, অনেক সময় খাবারের জন্য টাকাও থাকতো না আশুতোষের কাছে। ফলে সেই টাকা যোগানোর জন্য খেলার পাশাপাশি আম্পায়ারিংও করতে হয়েছে তাকে। ২০১৮ সালে প্রথমবার মুশতাক আলী ট্রফিতে মধ্য প্রদেশের হয়ে খেলার সুযোগ পান আশুতোষ। ২০১৯ সালে মধ্যপ্রদেশের হয়ে করেন ২৩৩ রান, তবুও ২২ বছর বয়সী আশুতোষ দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর প্রায় ৪ বছর শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলার সুযোগ হয়নি আশুতোষের। ২০২৩ সালে জীবনের মোড় ঘুরতে শুরু করে আশুতোষের। সুযোগ পান রেলওয়ের হয়ে খেলার। রেলওয়ের হয়ে সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে ১১ বলে ফিফটি করে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েন এই আশুতোষ। নজর কাড়েন আইপিএলের দল পাঞ্জাব কিংসের। ২০ লাখ রুপিতে আশুতোষকে দলে টানে পাঞ্জাব। আইপিএলে গত আসরে ৯ ইনিংসে ১৬৭ স্ট্রাইক রেটে ১৮৯ রান করেন আশুতোষ শর্মা, তেমন আহামরি পারফরম্যান্স নয়। তবে স্ট্রাইকরেটটা ছিল দারুণ। ফলে এবারের আসরের আগে মেগা নিলাম থেকে ৩ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে তাকে দলে নেয় দিল্লী ক্যাপিটালস। নতুন মৌসুমে প্রথম ম্যাচেই দিল্লীকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়ে আরও একবার নিজের সামর্থ্যরে জানান দিলেন আশুতোষ শর্মা।