আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে গ্যাস লিকেজজনিত অগ্নি-দুর্ঘটনা

এফএনএস এক্সক্লুসিভ : | প্রকাশ: ২৬ মার্চ, ২০২৫, ০৬:২০ এএম
আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে গ্যাস লিকেজজনিত অগ্নি-দুর্ঘটনা

আশঙ্কাজনক হারে দেশে গ্যাসের লিকেজজনিত অগ্নি-দুর্ঘটনা বাড়ছে। ওসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও আহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি অগ্নিদুগ্ধ আহতরা পার করছে দুর্বিষহ জীবন। গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে গত ২০২৪ সালে ৭০৪টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে ঘটে ৪৪টি দুর্ঘটনা। তাছাড়া গ্যাস সরবরাহের লাইন লিকেজ থেকে ৪৬৫টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় দোকানে যত্রতত্র রাখা হয় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। যদিও সঠিকভাবে রাখা হলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় একটি গ্যাস সিলিন্ডার। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। তাছাড়া প্রতি ১০ বছর পর বিস্ফোরক অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সিলিন্ডার পরীক্ষা করার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে আবাসিকের লাইনের গ্যাস কিংবা সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা। ঢাকা ও তার আশপাশে এসব দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। তবে গ্যাসের লিকেজ থেকে অগ্নি-দুর্ঘটনা বাড়লেও  সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা কম। কারণ সিলিন্ডারের ধারণক্ষমতা অনেক বেশি। মূলত  বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে অবৈধ গ্যাসের লাইনের কারণে। দেশের গ্যাস লাইনগুলো দীর্ঘদিনের পুরনো। ফলে দেশে বেশ কয়েকবার সংঘটিত ভূমিকম্পে মাটির নিচের ওসব গ্যাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে লিকেজ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত না।  

সূত্র জানায়, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আগে সাধারণত লিকেজ বেশি হয়। তাছাড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ রান্নাঘরে ভেন্টিলেশন। কোনো স্থানে দীর্ঘ সময় বাতাস চলাচলের পথ বন্ধ থাকলে এবং সেখানে কোনো গ্যাস লিকেজ থাকলে তা তখন জমাটবদ্ধ গ্যাসে পরিণত হয়। তখন যেকোনো স্পার্ক বা ম্যাচের কাঠি জ্বালালেই তা বিস্ফোরকে পরিণত হয়। তবে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ সহজেই হয় না। কারণ সিলিন্ডারের একটি মেয়াদ থাকে, যা এর গায়ে লেখা থাকে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও বিস্ফোরক অধিদপ্তর সিলিন্ডার পরীক্ষা করতে পারে।  ওই পরীক্ষার মাধ্যমে সিলিন্ডারের মান যাচাই করা যায়। প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পর সিলিন্ডার পরীক্ষা করা প্রয়োজন। তাছাড়া সিলিন্ডারের হোসপাইপ, রেগুলেটর, বাল্বের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলোর মান পরীক্ষাও করা প্রয়োজন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই  সাধারণ মানের এবং কমদামি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। 

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের লিকেজ পরীক্ষা করা ঠিক না। বরং কোনো স্থানে সন্দেহ হলে সাবান পানি দিয়ে পরীক্ষা করে এতে বুদবুদ হচ্ছে কি না দেখা যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নির্ধারিত স্থানে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায়। গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে গ্যাস ডিকেকটর ব্যবহার করা যেতে পারে। রান্নাঘরের ভেন্টিলেশন ঠিক রাখতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে