চিলমারীতে ভিজিএফ বিতরণে অনিয়ম

এফএনএস (মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম সিদ্দিক; চিলমারী, কুড়িগ্রাম) : : | প্রকাশ: ২৭ মার্চ, ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
চিলমারীতে ভিজিএফ বিতরণে অনিয়ম

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ঈদুল ফিতরউপলক্ষ্যে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা ৬ ইউনিয়নের বরাদ্দ কেটে সাড়ে ৩ হাজার নাম রিজার্ভ হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দেন ইউএনও। সচেতন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের ঈদুল ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে দুঃস্থ্য, অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবার প্রতি ১০ কেজি চাল হিসেবে ৩০হাজার ৩১০ পরিবারের জন্য উপজেলায় ৩০৩.১০০ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। যা স্থানীয় খাদ্য গুদামের মজুদ থেকে ব্যয় করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক। এ উপলক্ষে ১৩ মার্চ ২০২৫ তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দেখা যায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের জনসংখ্যা অনুপাতে বিভাজনকৃত বরাদ্দ থেকে ৩হাজার ৪৪৫টি পরিবারের জন্য ৩৪.৪৫০ মে.টন চাল  রিজার্ভ রাখা হয়। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট বরাদ্দের সাথে কথিত রিজার্ভ নাম সমূহ ইউনিয়ন পরিষদের সুবিধাভোগীর তালিকায় ফাঁকা রাখার জন্য নির্দেশ দেন ইউএনও। সে অনুযায়ী বিরতণ শুরু হলে, রিজার্ভের থাকা নামসমূহ ভিজিএফ প্রাপ্য যোগ্যতা বিবেচনা না করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রভাবশালীদের নামে বিতরণের জন্য তালিকা প্রেরণ করেন। থানাহাট ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন  জানান, থানাহাট ইউনিয়নের ৯১৫৯ পরিবারের জন্য চাল প্রাপ্য থাকলেও উপজেলা প্রশাসন থেকে ৭৮১৪টি পরিবারের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাকি ১৩৪৫টি নামের তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির নামে বিতরণের জন্য বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬টি ওয়ার্ডের চাল বিতরণ করা হয়েছে বাকি ৩টি সহ রিজার্ভের চাল আগামীকাল বিতরণ করা হবে। রমনা মডেল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা জানান, আমার ইউনিয়নের বরাদ্দ থেকে রাখা রিজার্ভের ৪৫০ নামের জন্য ট্যাং লড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র, জামায়াত, স্বেচ্ছাসেবক, মহিলা বিএনপি নেত্রী রোজী নামের তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। একই কথা জানিয়ে রিজার্ভের ৪০০ নাম রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির নামে বিতরণের জন্য তালিকাসহ মৌখিক আদেশ পেয়েছেন বলে জানান রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেহেদী আলম। নয়ারহাট ইউপি সদস্য ছাত্তার আলী জানান, ইউপি সচিবের নামে ডিও হয়েছে তিনি সবকিছু জানেন তবে শুনেছি ৫টি ওয়ার্ড ও রিজার্ভের চাল আগামীকাল বিতরণ করবেন। অন্যান্য ইউনিয়নেও একই চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন ঘুরে ভিজিএফ চাল বিতরণ নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। সুবিধাভোগীর তালিকার সাথে চাল গ্রহীতার নামের মিল নাই, এক ব্যক্তি হাতে ১৫টি পর্যন্ত স্লিপ দেখা গেছে। তালিকায় একই পরিবারের একাধীক নাম রয়েছে। নামের সাথে এনআইডির নম্বরের মিল নাই।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, ভিজিএফ তালিকায় রিজার্ভ সম্পর্কে আমার জানা নাই। ডিও অনুযায়ী চাল সরবরাহ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান, আমার কাছে নির্দিষ্ট কিছু কমিউনিটির তালিকা ছিল যা স্ব-স্ব ইউনিয়ন পরিষদে পাঠিয়েছি। রিজার্ভ বলতে আর কিছু নেই।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে