পাথরঘাটার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বিতরণকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগ

এফএনএস (পাথরঘাটা, বরগুনা) : : | প্রকাশ: ২১ মার্চ, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
পাথরঘাটার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বিতরণকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগ

ঈদ উপলক্ষে সারাদেশে সরকারের দেয়া দুস্থদের মধ্যে বিতরণকৃত চাল শাহ জাহান সিকদার নামের এক বিএনপির ওয়ার্ড সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এলাকায় জেলেদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি, বিভিন্ন শালিশের নামে হয়রানিসহ প্রবীণ ব্যক্তিদের মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন উপজেলা কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা। একই ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি মোঃ হাফিজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শাহ জাহান সিকদার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং পূর্ব ঘুটাবাছা এলাকার মৃত মেরজে আলী সিকদারের ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সরকার ঘোষিত দুস্থদের মাঝে ঈদের জন্য ১০ কেজি করে সারাদেশে চাল বিতরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বরগুনার পাথরঘাটায় একই নিয়মে চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। পাথরঘাটা উপজেলার খাদ্য গুদাম থেকে এই চালগুলো স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে বিতরণ কার্যক্রম চলে। কালমেঘা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিকদার দলীয় প্রভাবে ১২ জনের চাল একাই আত্নসাৎ করে। দুস্থদের নামের চাল নিজের ছেলে এবং

নাতনিদের হাতের টিপসই দিয়ে সংগ্রহ করে। সরকার ঘোষিত নিয়ম অমান্য করে চাল আত্নসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তি হওয়ায় এবং ছেলে সার্বক্ষনিক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে থাকায় কোন ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। এছাড়াও গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের পতনের পর কথিত বিএনপি নেতা শাজাহান সিকদার ও তার ছেলে ফিরোজ এবং তার নাতিদের দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সালিশির নামে টাকা চাদাবাজী এবং স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিদের মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শাহজাহানের ছেলে ফিরোজ এক সময় রেন্ট-এ কার হিসেবে গাড়ি চালালেও বর্তমান সময়ে তিনি বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করেই চলছেন। বিষখালি নদীর পাড়ের জেলেদের মাছ শিকার করতে হলে শাহজাহানের ছেলে ফিরোজকে চাঁদা দিয়ে মাছ শিকার করতে হয়।

স্থানীয় রফেজ মোল্লা, বাদল সিকদার, আল আমিন, সামছুল সিকদার ও জিহাদ জানান, গত আগস্টোর পর থেকেই শাহ জাহান সিকদারের ছেলে ফিরোজের সাথে সব সময়ই একটি দেশীয় অস্ত্র (ছ্যানা) থাকে।

এখন তারা বিএনপির বড় নেতা। এর আগে যখন আওয়ামীলীগের সময় গেছে তখন তারদের বাড়িতে সকল

নির্বাচনের সময়ই আওয়ামীলীগের নৌকার মার্কার আফিস থাকতো। এদের কাজই সন্ত্রসী কার্যক্রম চালানো। আওয়ামীলীগের সময়ও সুবিদা নিয়েছে আর এখন বিএনপির কথা বলেও সুবিদা নিয়ে যাচ্ছে।

দুস্ত মাঝে যে চাল দেয়া হয়েছে সেই নাম দিয়ে সোমবারও ১২ জনের নাম দিয়ে চাল বাড়িতে নিয়ে আসছে। এর আগে দেখেছি টিসিবিার চাল ডাল আসলে সেগুলোও তার বাড়িতে নিয়ে আসছে।

তাছাড়াও যতো ছোট জেলে আছে প্রত্যেক জেলেদের কাছ থেকে ৫শ থেকে শুরু করে ২ হাজার পর্যন্ত কওে চাঁদা তুলছে শাহজাহানের ছেলে ফিরোজ সিকদার।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান জানান, শাহাজাহান এরকমই করে আসছে। সে কারো কথাই শুনছে না। বিষয়টি আমি ইউনিয়ন এবং উপজেলা সভাপতিকে জানিয়েছি।

অভিযুক্ত শাহা জাহান সিকদার বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এঘটনা সব মিথ্যা, কারো কাছ থেকে কোন চাদা এবং চাল অত্নসাৎ করা হয়নি। আমার ছেলে এবং মেয়েদের নামে বরাদ্ধ ছিলো সেগুলো নেয়া হয়েছে। কেউ আিমার বিরুদ্ধে াপপ্রচার করছে।

কালমেঘা ইউনিয়নের সভাপতি মো. বাদল মিয়া জানান, শাহজাহান সিকদার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে এরকম চাঁদাবাজী এবং চাল আত্নসাতের বিষয়ে জানা নেই। আমি খোজ নিয়ে দেখবো, যদি কেই করে থাকে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুক জানান, এ ব্যাপারে আমি আপনার মাধ্যমেই জেনেছি। এরকম অনিয়ম করার কোন সুযাগ নেই। আমাকে তথ্য দিন, সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি বা আমার জানা নেই। এরকম যদি কেউ করে থাকে সেটি অন্যায়। তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে