রাতের আধাঁরে প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অসামাজিক ও অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার সময় জনতার কাছে হাতেনাতে আটক জেলার গৌরনদী উপজেলা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারী মাইনুল ইসলাম পলাশকে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিস্কার করা হয়েছে। শনিবার সকালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি আকবর হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শ, শৃঙ্খলা ও ইসলামী নৈতিকতা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগে গৌরনদী উপজেলার সাথী ও উপজেলা সেক্রেটারি মাইনুল ইসলাম পলাশকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার (বাতিল) করা হয়েছে।
ছাত্রশিবির সবসময় ছাত্রদের মধ্যে ইসলামী নৈতিকতা ও চারিত্রিক উৎকর্ষতা অর্জন এবং সবধরনের কবিরা গুনাহ হতে দূরে থাকার প্রশিক্ষণের উপর জোর দিয়ে জনশক্তি গঠন করে থাকে। এরপরেও কখনো কারও মাঝে মানবিক দূর্বলতার প্রকাশ ঘটা অসম্ভব ও অবাস্তব কিছু নয়। এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যথাসম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
গৌরনদী উপজেলার উক্ত ঘটনা জানার পর সাথে সাথেই মাইনুল ইসলাম পলাশের সাংগঠনিক সাথী পদ ও দায়িত্ব মুলতবি করা হয় এবং ছাত্র শিবিরের বরিশাল জেলা সেক্রেটারির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, মাইনুলের বক্তব্য নিতে না পারলেও (পুলিশ হেফাজতে থাকায়) অন্যান্য সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এরপর জরুরি দায়িত্বশীল মিটিং-এ সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সংগঠন থেকে বহিস্কার (বাতিল) করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
যদিও শুক্রবার রাতে গৌরনদী উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আল আমিন বলেছিলেন, মাইনুল ইসলাম পলাশকে আগেই শিবির থেকে বাতিল করা হয়েছে। তার সাথে শিবিরের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। বিজ্ঞপ্তির প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসলামী ছাত্র শিবির বরিশাল জেলা সভাপতি আকবর হোসেন বলেন, ২৫ সেশনে দায়িত্ব পেয়েছিলো মাইনুল ইসলাম পলাশ। বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানার পরপরই তাকে সংগঠন থেকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হয়। উপজেলা জামায়াত আমীরের বক্তব্যের বিষয়ে শিবির সভাপতি বলেন, উনি হয়তো জানতেন না।
উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত ভোর রাতে গৌরনদীর বদরপুর গ্রামের মুসল্লী বাড়ি মসজিদের ইমাম ও উপজেলা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারী মাইনুল ইসলাম পলাশকে মসজিদ সংলগ্ন পাশের বাড়ির এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী (দুই সন্তানের জননী) ঘরে অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকান্ডের সময় এলাকাবাসী হাতেনাতে আটক করে। পরবর্তীতে ৯৯৯ নাম্বারের মাধ্যমে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রবাসীর স্ত্রীসহ মাইনুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটককৃত মাইনুল উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম শোলক গ্রামের শাহ আলম ফকিরের ছেলে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া বলেন, অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার দায়ে ওই দুইজনকে জনরোষ থেকে রক্ষা করে থানায় নিয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুক্রবার বিকেলে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতের বিচারক দুইজনকেই জেলহাজতে প্রেরণ করেন।