নাটোরের বড়াইগ্রামে রাতের অন্ধকারে আশীষ গমেজ (২৬) নামে এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী আখ্যা দিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয় বলে জানা গেছে। বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ সময় তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিও ভাংচুর করা হয়। স্থানীয় বিএনপির রাজু গ্রুপের নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি নির্যাতিত যুবকের স্বজনদের। আশীষ গমেজ উপজেলার বাহিমালী খ্রীষ্টান পাড়ার এডওয়ার্ড গমেজের ছেলে। তিনি সাভারে একটি কারখানায় ইলেকট্রিশিয়ান হিসাবে কর্মরত।
জানা যায়, আশীষ কালিকাপুরে খালার বাসায় বেড়ানো শেষে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে মোটর সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বনপাড়া এলাকায় এলে কয়েকটি মোটর সাইকেল নিয়ে হামলাকারীরা তাকে পিছু ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে আশীষের বাড়ির কাছে গিয়ে তাকে ধরে ফেলে তারা। পরে সেখানেই লোহার রড ও বাটাম দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে জখম করে তারা। এ সময় তার মোটর সাইকেলটি ভাংচুর করে। পরে তাকে আরেকটি মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে বনপাড়া বাজারে আসে তারা। এখানেও দফায় দফায় তাকে পেটানো হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা দ্রুত সটকে পড়ে। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করেন। তাকে নির্যাতনের বেশ কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্যাতিত আশীষ গমেজ বলেন, আমি আওয়ামীলীগকে ভালবাসি। তবে কোন পদ-পদবিতে কখনই ছিলাম না। তারা এভাবে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করবে তা কখনে ভাবিনি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। বনপাড়া প্যারিস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি মি. রতন পেরেরা জানান, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। আমরা খ্রীস্টান সমাজের নেতারা বসেছিলাম, আপাতত সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বনপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন রাজু বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এ ঘটনার সাথে বিএনপির কোন কর্মী জড়িত নয়। বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।