নাটোরের বড়াইগ্রামে ইজরাইলবিরোধী মিছিল ও নেতানিয়াহু’র কুশপুত্তলিকা দাহ করা নিয়ে কথা কাটাকাটির দ্বন্দ্বে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের কামারদহ বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শনিবার এ ঘটনায় মুল অভিযুক্ত বিএনপির বহিষ্কৃত কর্মী আরিফুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রাতেই রাজশাহী থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরিফুল ইসলাম উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের মৃত সরেশ ফকিরের ছেলে।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- কামারদহ গ্রামের বিএনপি কর্মী প্রভাষক মামুনুর রশীদ (৫০), মাজহারুল ইসলাম রান্টু (৫২), আয়নুল হক (৪৮), পলাশ (৩০), মনিরুল ইসলাম (৪৪), মিজানুর রহমান (৪৮), মাসুদ রানা (৪৬), আব্দুল মোমিন মো, ফিরোজ মঞ্জু (৬৫), মাসুদ রানা মিন্টু (৪৭), ছবেল আলী (৪৭), মোতালেব হোসেন (৪৫), শরিফুল ইসলাম (৫০), জাহিদুল ইসলাম (৪০), আলিফ হোসেন (২৮), রায়হান (৩০) ও নাদের আলী (৬০) আহতদের মধ্যে জাহিদুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদেরকে নাটোর সদর হাসপাতাল, বড়াইগ্রাম হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কামারদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর মধ্যেই শুক্রবার বিকালে নাদের আলীর সমর্থকরা কামারদহ বাজারে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে তারা নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করার সময় মাসুদ রানার সমর্থকরা তাদেরকে রাস্তার এক পাশে যেতে বলেন। এ সময় বিষয়টি নিয়ে মাসুদ রানা গ্রুপের প্রভাষক মিজানুর রহমানের সাথে নাদের গ্রুপের আলীফ ও লিটন মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষই হাতুড়ি, হাসুয়া, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত কয়েক দফা সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। এ সময় দুটি দোকান ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে মাসুদ রানা বলেন, তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করে রাস্তার মাঝখানে কুশপুত্তলিকা দাহ করছিল। এ সময় মাগরিবের আজান দেয়ায় আমরা লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার্থে তাদেরকে রাস্তার একপাশে গিয়ে আগুন জ্বালাতে বলি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাদের দোকানপাটে হামলা ও মারপিট করেছে। অপরদিকে নাদের আলী বলেন, আমাদের ছেলেরা হামলা করেনি, বরং তারাই প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের মারপিট করেছে।
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সেনাবাহিনীও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই মামলা দায়ের করেছে। তবে ঘটনার মুল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।