আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে ভিটেবাড়ীর জমি দখল নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ৪ জন আহত, আরও কয়েকজন লাঞ্চিত এবং যাতয়াতের পথ তছনছ ও ঘর বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী জানান, বড়দল ইউনিয়নের পাঁচপোতা গ্রামে মৃত রামপদ মন্ডলের ছেলে পুলিন বিহারী ও রমেশ মন্ডলের ছেলে হিরামন মন্ডল পাশাপাশি বসবাস করেন। যাতয়াতের পথ নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ছিল দুই পরিবারের মধ্যে। এনিয়ে মামলা, শালিস বিচার হয়েছে অনেকবার। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আপোষে চলাচলের পথ বের করে দিলে সে পথেই চলাচল চলে আসছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে পথে বেড়া দেয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মারামারি হয়। হিরাময় মন্ডলের হাতুড়ি পেটায় বৃদ্ধ পুলিন মন্ডল (৭৫) গুরুতর আহত হন। এসময় পুলিনের ভাইপো শিব প্রসাদ, শিব প্রসাদের ছেলে সুদীপ্ত ও ভীস্ম নামে অপর একজন আহত হয়েছে। পুলিন ও শিব প্রসাদকে সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুদীপ্ত জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৮.৩০ টার দিকে পুলিন দোকান থেকে একটি রুটি খেয়ে একপিচ স্ত্রীর জন্য নিয়ে বাড়ি ফিরলে তাকে হিরাময় হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর যখম করে। আমার পিতা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়। কালিপদ মন্ডল জানান, এদিন সকালে প্রতিপক্ষ পুলিনকে আজ রাতে তোর ব্যবস্থা করা হবে বলে শাসিয়ে ছিল। রাতেই তাই করা হলো।
স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধ পুলিন নিরিহ মানুষ। বয়সের ভারে কাজ করে খাওয়ার ক্ষমতা না থাকায় মাঝে মধ্যে ঘের থেকে ২/১ কেজি মাছ নিয়ে সেটে বিক্রয় করে যা ২/১০ টাকা লাভ হয় তা দিয়ে নিজে ও অসুস্থ স্ত্রীর মুখে যা জোটে তাই তুলে দেয়। মাঝে মধ্যে না খেয়ে দিন পার করতে হয়। তাকে মারপিট করা হয়েছে শুনে এলাকার লোকজন হিরামনের যাতয়াতের পথের ইট তুলে তছনছ করে এবং বাড়িতে আক্রমন করে ঘরের কিছু ক্ষয়ক্ষতি করা হয়। হিরাময় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আছে।
হিরাময়ের মা দাসী রানী ও অন্যরা বলেন, পুলিন শুক্রবার সকালে পথে বেড়াদিয়ে আটকে দিলে অনুনয় করা হয়, দুপুরে আবার চটা-বাঁশ দিয়ে পথ বন্ধ করে দেয়। এরই জের ধরে মারামারি হয়। তখন দুপক্ষের কেউ কেউ আহত হয়। হিরামনদের বাড়িতে বেড়াতে আসা মমতা দাশকেও লাঞ্চিত করা হয় বলে তারা জানান। ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান পথের শালিস করে আপোষ মীমাংসা করে দেন। তখন তারা পথ বাবদ ৪০০০ টাকা ও পাশ থেকে সম পরিমান জমি দিয়েছিলেন বলে জানান।