ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শিশু আদনানের (৮) বিস্ময়কর সাফল্যে হতবাক সকলেই। মাত্র ৭৫ দিনে ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার অসাধারণ গৌরব অর্জন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে শিশু আদনান। আদনান সরাইল সদর ইউনিয়নের মোঘলটুলা গ্রামের মোহাম্মদ উবায়দুল্লাহর ছেলে। শিশু আদনানের প্রতিভা ও কৃতিত্বকে স্যালুট জানাচ্ছেন অনেকেই। চারিদিকে বাহবা আর গুণকীর্তন চলছে আদনানকে ঘিরে। পিতা মাতা শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানটি উঠে এসেছে সকলের আলোচনায়। বাংলাদেশে এমন দৃষ্টান্ত আর আছে কিনা তা ভাবছেন স্থানীয় আলেম ওলামারা।
মাদ্রাসা ও পারিবারিক সূত্র জানায়, আদনান ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সরাইল বিকাল বাজার আবরারিয়া মডেল মাদ্রসায় ভর্তি হয়। ভর্তির পর সে নুরানি পড়তে শুরূ করে। নুরানি কায়দা ও সিপারা শেষ করতে তার সময় লাগে প্রায় ১৪-১৫ মাস। শুরূ হয় কোরআন শরীফ নজরানা পড়া। খুবই গতিতে পড়া এগুতে থাকে আদনানের। সেই গতিই ইঙ্গিত করতেছিল শিশু আদনান তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখবেন। অল্প সময়ের মধ্যেই আদনান নজরানা সাফল্যের সাথে শেষ করে। এরপরই মাদ্রসা কর্তৃপক্ষ আদনানকে কোরআন শরীফ মুখস্থ করা অর্থাৎ হাফেজ হওয়ার পাঠদানে লাগিয়ে দেন। এবার আরো গতিতে এগুতে থাকে এই প্রতিভাবান শিশুটি। আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রতিদিন আধাপারা/এক পারা অনেক দিন তার চেয়েও বেশী করে মুখস্থ করতে থাকেন শিশু আদনান। শিশু আদনানের এমন সাফল্য মাদ্রসার শিক্ষকদেরও বিস্মিত করে। আর তখনই আদনানের দিকে মাদ্রাসার শিক্ষকদের (হুজুরদের) নজর ও গুরূত্ব বাড়তে থাকে। মাত্র ২ মাস ১৫ দিনে অর্থাৎ ৭৫ দিনে ৩০ পারা বা ৬৬৬৬ টি আয়াত মুখস্থ করে রেকর্ড করেছে শিশু আদনান। মাত্র ৮ বছর বয়সের শিশু আদনান হাফেজ হওয়ার খেতাব ও গৌরব দুটোই অর্জন করেছে। সুখের হাঁসি ফোটে উঠেছে শিক্ষক, পিতা মাতা ও স্বজনদের মুখে। সরাইল শাহী জামে মসজিদ (হাটখোলা) পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা কুতুব উদ্দিন ও মাওলানা শেখ আমান উল্লাহ বলেন, আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন ‘আমি কোরআন নাযিল করেছি, তাহা সংরক্ষণের দায়িত্বও আমার’। শিশু আদনানের দ্বারা মাত্র ৭৫ দিনে কোরআন হেফজ্ করা আল্লাহর বিশেষ মেহেরবানী ও অলৌকিকতা। মহান রবের কোরআন যে সত্য তার একটা অকাট্য প্রমাণও বটে। আমরা শিশু আদনান, তার পিতা মাতা ও শিক্ষকদের জন্য দোয়া করি।