ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ছিল প্রেমের গুঞ্জন। একবার ওই ছাত্রীর অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার খবরও ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসব খবরকে ষড়যন্ত্রমুলক দাবি করে তা অস্বীকার করে আসছিলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন। অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বুধবার ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন। ওই ছাত্রীর নাম দোলা আক্তার (১৬)। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রী দোলা আক্তার এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবে। এর আগেও একই প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নবম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন।
এদিকে ছাত্রী দোলা আক্তারকে বিয়ের সংবাদ প্রকাশ হয়ে পড়ায় তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। অনেকে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের অপসারণসহ বিচার দাবি করেছেন। স্থানীয়দের মাঝেও চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন হাজীগোবিন্দপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মণ্ডলের ছেলে। অভিযোগে উঠেছে বাবা মুক্তিযোদ্ধা এবং ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ায় সবধরণের অপরাধ করেও পার পেয়ে যান তিনি।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন এর আগেও একই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী রিনা আক্তার পুতুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই সময় দ্বিতীয় স্ত্রী পুতুলকে নিয়ে প্রেমের গুঞ্জন উঠেছিল প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকাবাসি ফুঁসে উঠেন। পরে ধামাচাপা দিতে পুতুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করে সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের সঙ্গে ছাত্রী দোলা আক্তারকে নিয়ে প্রেমের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার বৈঠকও হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আকরাম এসবের তোয়াক্কা না করে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যান। প্রধান শিক্ষকের এসব আচরনের কারণে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মণ্ডল এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। এ কারণে বাবার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করেও তিনি পার পেয়ে যান। বারবার ছাত্রী কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটালেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রধান শিক্ষকের চরিত্রগত সমস্যায় ছাত্রীদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকেরা।
স্থানীয় আব্দুস সালাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, মঙ্গলবার সকালে ছাত্রী দোলাকে প্রধান শিক্ষক আকরামের প্রথম স্ত্রী স্বপ্না খাতুনের বাসায় তুলে দেন তার অভিভাবকেরা। এর পর থেকে দোলা সেখানেই অবস্থান করছিলেন। উপায়ান্ত না থাকায় বুধবার তাকে সামাজিকভাবে বিয়ে করেন আকরাম হোসেন।
ছাত্রীকে তৃতীয় বিয়ে করা প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, ছাত্রী দোলাকে আমি সামাজিকভাবে বিয়ে করেছি। তাকে অনেক আগেই বিয়ে করতাম। কিস্তু বয়স সমস্যার কারণে করিনি। আমি একাধিক বিয়ে করতেই পারি। এখানে কারো কিছুই আসে যায় না।